‘পাইল’ নিয়ে আসছে প্রথম জাহাজ

107

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে নির্মিত হচ্ছে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি)। ফ্লাইওভার, কনটেইনার ও ডলফিন জেটি, ব্যাকআপ ইয়ার্ডসহ বহুমুখী এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
প্রকল্প পরিচালক মো. মিজানুর রহমান সরকার জানান, পিসিটির জেটি নির্মাণের জন্য পাইলিংকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। চীন থেকে ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক পাইল ড্রাইভিং শিপ এনে টেস্ট পাইলিং করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় ৩০-৩৮ মিটার দীর্ঘ দশমিক ৯ মিটার ব্যাসের ১ হাজার পাইল নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ৬টি ট্রিপে পাইলগুলো আনা হচ্ছে। প্রথম ট্রিপে ২ শতাধিক পাইল শিপমেন্ট হয়ে গেছে। জুলাই মাসেই পাইলগুলো প্রকল্প সাইটে পৌঁছাবে। পাইল ড্রাইভিং শিপ দিয়ে একেক ট্রিপের পাইলিং শেষ হওয়ার আগেই আরেক ট্রিপ এসে পৌঁছাবে।
তিনি জানান, প্রকল্পের সাড়ে ১৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে পূর্ত কাজের ২৯ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। গ্রাউন্ড ইমপ্রæভমেন্টের ৮৫ শতাংশ, ৪২০ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারের ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এককথায় বলা চলে প্রতিদিনই ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে পরিকল্পনা অনুযায়ী। জেটি, সড়ক স্থানান্তর, সীমানা প্রাচীরের কাজের পাশাপাশি চলছে রেড ক্রিসেন্ট, মেরিন ফিশারিজ, কাস্টম এফ ডিভিশন, ওমেরার স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার কাজও। খবর বাংলানিউজের
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বছরে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টিইইউ’স কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যে নির্মিত হচ্ছে পিসিটি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অধীনে ৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ সাইটে কাজ করছেন। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ২৮ লাখ টাকার এ প্রকল্পে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে।
পিসিটিতে ৬০০ মিটার জেটিতে একসঙ্গে ১৯০ মিটার লম্বা ও ১০ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) ৩টি কনটেইনারবাহী জাহাজ এবং ২২০ মিটার দীর্ঘ ডলফিন জেটিতে ১টি ভোজ্যতেলবাহী জাহাজ ভিড়ানো যাবে। ৩২ একর জমিতে নির্মাণাধীন এ প্রকল্পে ব্যাকআপ ইয়ার্ড থাকবে ১৬ একর। যেখানে ৪ হাজার ৫০০ টিইইউ’স কনটেইনার ধারণক্ষমতা থাকবে।
এ প্রকল্পে ১ লাখ ১২ হাজার বর্গমিটারের আরসিসি পেভমেন্ট (অভ্যন্তরীণ ইয়ার্ড ও সড়ক), ২ হাজার ১২৮ বর্গমিটার কনটেইনার ফ্রেইট স্টেশন (সিএফএস) শেড, ৬ মিটার উঁচু ১ হাজার ৭৫০ মিটার কাস্টমস বন্ডেড ওয়াল, ৫ হাজার ৫৮০ বর্গফুটের পোর্ট অফিস ভবন, ১ হাজার ২০০ বর্গমিটারের যান্ত্রিক ও মেরামত কারখানা, বিমানবন্দরগামী গাড়ি চলাচলের জন্য ৪২০ মিটারের ফ্লাইওভার, চার লেনের পৌনে ১ কিলোমিটার এবং ছয় লেনের ১ কিলোমিটার সড়ক পুননির্মাণ করা হবে।
এ টার্মিনালে ৪টি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন (কিউজিসি), ৮টি রাবার টায়ারর্ড গ্যান্ট্রি (আরটিজি), ৪টি স্ট্রাডেল ক্যারিয়ার, ৪টি রিচ স্ট্যাকার,১টি রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরএমজি), ৪টি লো-মাস্ট ফর্ক লিফট, ২টি ফায়ার ট্রাক, ১টি ফায়ার কার, ৩টি নিরাপত্তা পেট্রোল কার, ১টি অ্যাম্বুল্যান্স, ৫০ টনের দুইটি টাগ বোট, ২টি পাইলট বোট, ২টি ফার্স্ট স্পিড বোট থাকবে। ২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এ প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। গত ২০ মে এ প্রকল্পের অগ্রগতি সরেজমিন পরিদর্শন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। চলতি বছরের (২০১৯) ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।