পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তান্ডবে নিহত ৬

36

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল যতটা আগ্রাসী হবে ভাবা হয়েছিল, ততটা না হলেও এর তাÐবে ক্ষয়ক্ষতি খুব কমও হয়নি। এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রায় তিন লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড় নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ফোন করে ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে সব ধরনের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। এর আগে রাজ্যটিতে ঘূর্ণিঝড় ফণীর তান্ডবের সময় একাধিক বার ফোন করলেও, মমতা কথা বলেননি বলে অভিযোগ করেছিলেন মোদী। এবার তা হয়নি। বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ফোনে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে দুইজনের মধ্যে।
এনডিটিভি জানায়, মোদী নিজেই রোববার সকালে মমতাকে ফোন করে ঝড়ে তার রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চান এবং সাহায্যের আশ্বাসও দেন। পরে এক টুইটে মোদী লেখেন, “ঘূর্ণিঝড় এবং ভারি বৃষ্টির পর পূর্ব ভারতের একাধিক এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাÐবে এই মুহূর্তে সেখানকার পরিস্থিতি কেমন তা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাকে সবরকম সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। সকলে সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন, এই কামনাই করি।”বুলবুলের তাÐবে গোটা রাজ্যে প্রাথমিকভাবে ১০ জনের মৃত্যুর খবর আসলেও সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সবক’টি মৃত্যু বুলবুলের কারণে কি না সেটিই জানার চেষ্টা চলছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান ঝড়ে ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়, ১ জন করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে।
নয়টি জেলার জেলাশাসকদের পাঠানো প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ২ লক্ষ ৭৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সাড়ে ২৯ হাজারের মতো বাড়ির পুরোপুরি বা আংশিক ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু, ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও, ঝড়ের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৯৫০ টি মোবাইল টাওয়ার। যার ফলে ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত এলাকায় ব্যপকভাবে বিঘিœত হয়েছে টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা। ক্ষয়ক্ষতি এবং ঝঞ্ঝা পরবর্তী পরিস্থিতি সোমবার আকাশপথে পর্যবেক্ষণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ উপকূল দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসে। ওই সময় বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার, যা বেড়ে মাঝেমধ্যে ১২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছে।ঝড়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগন জেলার কাকদ্বীপ ও বকালি এবং পূর্ব মেদিনিপুরের খেজুরি, নন্দগ্রাম, নয়াচর ও রামনগর এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় ঝড়ো বাতাসে গাছ উপড়ে গেছে, অনেক ঘরের চাল উড়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দোকানপাট। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।