পশুরহাট সংক্রমণমুক্ত রাখতে কঠোর থাকব

32

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, পবিত্র ঈদ-উল-আযহায় মুসলমানদের দু’টি মূল ওয়াজিব হলো ঈদের নামাজ ও আল্লাহর উদ্দেশ্যে সামর্থবানদের পশু কোরবানি দেয়া। এবার করোনা মহামারির মধ্যেই আমাদের ঈদ উদযাপন করতে হবে। তাই ধর্মীয় রীতিনীতি মেয়ে সীমিত ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি-ব্যবস্থা মেনে ঈদ উদ্যাপন করতে হবে। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কোরবানি দিতে হবে। এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে নগরীতে কোরবানীর পশুর হাটগুলো যেন সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হয়। এজন্য পশুর হাটগুলোতে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণসহ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট স্থানে পশু বাঁধার খুঁটি, ছাউনি, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও জীবাণুনাশক সামগ্রী বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট দোকান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের ক্যাম্প ছাড়া আর কোনো ধরনের দোকানপাট বা স্থাপনা থাকবে না। এছাড়াও কোনো বয়স্ক ব্যক্তি এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু-কিশোররা পশুর হাটে আসতে পারবেন না এবং পশু ক্রেতার সাথে সর্বোচ্চ দুই জনের বেশি যাওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন, পশুর হাটগুলোতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় সেগুলো যথাযথভাবে পালন করবে।
গতকাল সোমবার সকালে টাইগারপাসস্থ চসিক নগভবনের সম্মেলন কক্ষে পশুরহাট ইজারাদারদের সাথে বৈঠকে সিটি মেয়র এসব কথা বলেন। তিনি আরো জানান, পশুর হাটে জীবাণুনাশক এবং হ্যান্ডস্যানিটাইজারের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা থাকবে। এর বাইরে হাট ইজারাদারেরা বিক্রেতাদেরকে ক্রেতাদের হাত ধোয়ার পানি, সাবান ও টিস্যু পেপার সরবরাহ ও শরীরের তাপমাত্র মাপার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ক্রেতা-বিক্রেতা প্রত্যেককেই অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতসহ হাটে প্রবেশমুখে ও হাটের ভিতরে ‘মাক্স ব্যবহার করুন, হাত ধৌত করুন ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন’ লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানোর ব্যবস্থা করবেন।
সিটি মেয়র সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বসাশিত ও বেসরকারি সংস্থার চাকুরেদের বেতন-ভাতা-বোনাস আগেভাগে প্রদান করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, প্রায় ক্ষেত্রেই ঈদের দু-একদিন আগে চাকুরেদের বেতন-ভাতা-বোনাস দেয়া হতো। এর ফলে শেষের দিকে পশুর হাটগুলোতে মানুষের ভীর উপচে পড়ে। বিক্রেতারাও ক্রেতাদের বেতন-বোনাস না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। তাই পশুরহাটে শেষের দিকে উপচে পড়া ভীড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। এবার যাতে সেধরনের অবস্থার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য তিনি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সভায় চসিকের কাউন্সিলর এএফএম কবির আহমেদ মানিক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, এস্টেট অফিসার এখলাস উদ্দিন আহমদ, ইজারাদারের পক্ষে মোহাম্মদ সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ মামুন, মোহাম্মদ ওয়াহিদুল আলম চৌধুরী, মোহাম্মদ আজাদ, নজরুল ইসলাম মিন্টু, মোহাম্মদ জামসেদ, মোহাম্মদ ফারুক বাবুর্চি, আবদুর রশিদ লোকমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে জনসচেতনতা ও পশুর হাটের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর প্রামান্য চিত্র উপস্থাপন করেন চুয়েটের ছাত্রী তাসফিয়া তাজনিম ও অর্ক।
অলি খাঁ মসজিদ কমপ্লেক্স পরিদর্শন :
এদিকে, সোমবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নগরের চকবাজারে অবস্থিত অলি খাঁ মসজিদ কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি মসজিদের আধুনিকায়নকৃত কর্মযজ্ঞ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরিদর্শনকালে কাউন্সিলর সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু, এসএম সাইফুদ্দিন, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ আনসার, তৌহিদুল আনোয়ার, খালেদ জামান, মনজুর হোসাইন, মোস্তাক আহমেদ টিপু, এসএম মামুনুর রশীদসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সিটি মেয়র বলেন, এই মসজিদ কমপ্লেক্সটি চট্টগ্রামে ইসলামী স্থাপত্য রীতির প্রতিফলনে আমাদের ইতিহাসে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষিত হবে এবং এ থেকে আত্মশুদ্ধির পবিত্র স্পর্শ পাবো। আজ সকালে আধুনিকায়নকৃত চকবাজারস্থ অলি খাঁ মসজিদ পরিদর্শনকালে মেয়র এসব কথা বলেন।