পর্যটনশিল্পের বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে

34

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনারে হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিশ্লেষকরা। এ সময় সেখানকার নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা পিরিস্থিতিসহ পর্যটন ব্যবসায় জড়িতদের বিরূপ আচরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়ন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।
তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও, তা কেবল সেমিনার-কর্মশালার মধ্যেই থেকে যায়। বাস্তবে আলোর মুখ দেখছে না।
গতকাল শনিবার রাঙামাটিতে দিনব্যাপী ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে টেকসই ও দায়িত্বশীল পর্যটন উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১টায় শুরু হওয়া সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এতে সভাপতিত্ব করেন।
এতে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান কবির বিশেষ অতিথি ছিলেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকার সাতত্য আর্কিটেকচার ফর গ্রিন লিভিং ফার্মের প্রধান স্থপতি রফিক আজম ও বেস ক্যাম্প বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামজিদ সিদ্দিক স্পন্দন।
সেমিনারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, উন্নয়ন সংগঠক, আবাসিক হোটেল মালিকসহ বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। তবে পার্বত্য শান্তিচুক্তির শর্ত মোতাবেক প্রধান সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক পরিষদের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
সেমিনারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের দূষণ এবং সাজেকের পর্যটন এলাকার পরিবেশ বিনষ্টের পথে বলে উল্লেখ করে আলোচকরা। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান প্রতিকূলতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নিরাপত্তাজনিত বিষয় ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় জড়িতদের বিরূপ আচরণ নিয়ে পর্যটনের উন্নয়নে হতাশা ব্যক্ত করেন তারা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশেসিং বলেন, অনেক হোটেলে পাঙ্গাস মাছকে বোয়াল বলে বিক্রি করা হয়। পর্যটকদের নিয়ে টানাটানি করেন যানবাহনের লোকজন। স্থানীয় কিছু লোকজনের কারণে অনেক সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও বিঘ্ন ঘটে। এ অবস্থায় তো পর্যটক আসবেন না।
তিনি বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ অঞ্চলের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, খাদ্যাভ্যাসসহ সবকিছুর বিবেচনায় রেখে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রতি সব সময় আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী বলে আসছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাদ রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময় বিরাট সম্পদ।