বর্ষাকাল শেষ হলেও বৃষ্টির পরিবেশ সমাপ্ত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে শরৎকালেও কিছু কিছু বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মৌসুমেই বৃক্ষের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। বর্ষাকাল থেকে দেশে বৃক্ষরোপণ শুরু হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রাকৃতিক বিপর্যয়রোধে বৃক্ষরোপণের অপরিহার্যতা ব্যাখ্যা করেন। আমরা জানি বিশ্বে উষ্ণায়নের ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস, সুনামি, ভ‚মিকম্প, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাতের পরিমাণ আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বে বেড়েই চলেছে।
এমতাবস্থায় পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বে বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বিপ্লব সংগঠিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। গাছ/বৃক্ষ প্রাকৃতিক পরিবেশের একটি প্রধান উপাত্ত। বিশ্বে আমাজান পর্বত মালায় আগুন ধরে বন পুড়ে যাওয়ার ঘটনার প্রভাব পড়বে সমগ্র বিশ্বে। নগরায়নের ফলে দেশে যে পরিবেশ তথা গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে তা পুষিয়ে নিতে দেশের মানুষকে বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করতে হবে। দেশের মানুষ পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষ রোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে বর্তমানে অনেক বেশি সচেতন। সরকারি-বেসরকারি বৃক্ষ রোপণ কমৃসূচি পালিত হচ্ছে সারা দেশব্যাপী। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বাড়ির আঙ্গিণায়, সড়ক, পুকুরপাড়ে এমনকি যেকোন খালি জায়গায় বৃক্ষ রোপণ করে আমরা আমাদের সুবজ পরিবেশকে উন্নত করতে পারি। উক্ত বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দেশব্যাপী গাছের চারা বিতরণ ও বৃক্ষ রোপণে সর্বস্তরের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছে। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি- চট্টগ্রাম মহানগরীতে গাছ লাগাতে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করতে কাজীর দেউড়ি আউটার স্টেডিয়ামে গত ২৫ আগস্ট শুরু হয়েছে ১৫ দিনব্যাপী সবুজ মেলা। যা উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র। গাছ লাগানো এবং সবুজ পরিবেশ সৃষ্টির যে আন্দোলন দেশব্যাপী গড়ে উঠেছে তাতে দেশের সামগ্রীক আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য ফিরে আসবে এমন ধারণা আমাদের।
গাছ হলো অক্সিজেনের ফেক্টরি। এই অক্সিজেন উৎপাদক গাছ আমরা যত বেশি পরিমাণে লাগাবো, তত বেশি আমাদের পরিবেশ উন্নত হবে। কলকারখানা বৃদ্ধির ফলে দেশে যে কার্বনডাই অক্সাইড বেড়ে গিয়েছে তা বৃক্ষ গ্রহণ করে দেশের পরিবেশকে মানবের বসবাসের উপযুক্ততা দান করে।
আমরা যে যেখানে আছি সেখানে বৃক্ষ রোপণ করে আমাদের পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখতে পারি। এ ব্যাপারে সরকারসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আরো সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। আমাদের দেশে যে বনাঞ্চল রয়েছে তা দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় যথেষ্ট নয়। দেশের বনাঞ্চল রক্ষার পাশাপাশি সরকারকে সমগ্র দেশের মধ্যে যেখানে বৃক্ষ রোপণ করার সুযোগ রয়েছে সেখানে গাছের চারা লাগিয়ে বনাঞ্চলের অভাব পূরণ করতে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা সরকার ও জনগণের মাধ্যমে দেশটার মধ্যে একটি অন্যান্য সাধারণ সবুজ মেলা সৃষ্টি করতে পারলে এ দেশে বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় কমে আসবে।