‘পরাশক্তির’ কাছে বিক্রি হয়ে গেছে সরকার

48

বর্তমান সরকার ‘পরাশক্তির’ কাছে বিক্রি হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার দুপুরে এক গণঅনশন কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। তারা ক্ষমতা দখল করে আছে বেআইনিভাবে। তারা বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে এবং করেও ফেলেছে। বাংলাদেশ এখন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র। উদ্দেশ্য- বাংলাদেশকে একটা নতজানু পরনির্ভরশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। পরাশক্তিগুলোর কাছে তারা বিক্রি হয়ে গেল। তারা আজকে নেতাদেরকে, দেশকে বিক্রি করে দিয়ে দাসে পরিণত হয়েছে’।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘কি ভয়ংকর কথা- যে মহিলাকে নোয়াখালীর সূবর্ণচরে যে ব্যক্তির নির্দেশে গণধর্ষণ করা হলো, সেই নির্দেশদাতা আওয়ামী লীগ নেতাকে উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়েছে এক বছরের জন্যে। অথচ আমাদের এখানে শত শত হাজারো নেতা-কর্মী আছেন, যাদের বিরুদ্ধে শত শত মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে তাদেরকে জামিন দেওয়া হয় না। দুর্নীতির দায়ে দÐপ্রাপ্ত মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহীউদ্দিন খান আলমগীরসহ আওয়ামী লীগের নেতারা জামিন পান’। খবর বিডিনিউজের
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচে দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রতীকী গণঅনশন হয়। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আশফাক খন্দকারের সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিতে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, রফিক হাওলাদারসহ নবাবগঞ্জ, দোহারের স্থানীয় নেতারা এতে বক্তব্য রাখেন।
‘ভিন্নমত পোষণ করলেই নির্যাতন’
এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার সমগ্র দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। মানুষের অধিকারকে তারা কেড়ে নিচ্ছে। আজকে কবিকে তারা কারাগারে পাঠায়, সাহিত্যিককে কারাগারে পাঠায়, শিল্পীকে কারাগারে পাঠায়, সাংবাদিকদের কারাগারে পাঠায়। কেউ এতোটুকু ভিন্নমত পোষণ করলে তার ওপর নির্যাতন নেমে আসে’।
জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস এর উদ্যোগে কবি আল মাহমুদ স্মরণে এই আলোচনা সভা হয়। প্রয়াত কবি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আল মাহমুদ সাহেবকে শহীদ মিনারে নিয়ে সম্মান দেখানো হয়নি। এরা সম্মান দেখাবে কোত্থেকে? আমার সন্দেহ হয় যে, তারা কি সেই একুশের চেতনা বিশ্বাস করে? করে না। তারা কি একাত্তরের চেতনাতে বিশ্বাস করে? করে না। যে স্বাধীনতার কথা তারা বলতে থাকে তার কতটুকু তারা বিশ্বাস করে?’
গত ১৫ ফেব্রæয়ারি ৮২ বছর বয়সে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কবি আল মাহমুদ। সংগঠনের সহ-সভাপতি বাবুল আহমেদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সাংবাদিক আলমগীর মহিউদ্দিন, কবি আবদুল হাই শিকদার, জাসাসের সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক, হান্নান মাসুদ, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, শিবা সানু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।