পরকীয়ার বলি

314

ইমরান হোসেন একটি গার্মেন্স ফ্যাক্টরীতে চাকরি করে। প্রথম প্রথম তার খুব খারাপ লাগলেও এখন তা সয়ে গেছে। একমাত্র কন্যাসন্তান জন্ম লাভের পর থেকে তার পুরো জীবনের অধ্যায় পাল্টে গেছে। এখন নিয়মিতভাবে মসজিদে নামাজ আদায় করে। সহকর্মীদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করে।
আগে রোজই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হতো তার। যেসময় সে আয়-রোজগার নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে সেসময় তার স্ত্রী বিনোদনে ব্যস্ত সময় পার করেছে। স্ত্রী মন চাইলেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যেতে চাইতো। কিন্তু সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসার পর ইমরান হোসেনের কোথাও যেতে মন চাইতো না। এ নিয়ে ওদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকতো।
একদিন অফিস থেকে ফিরে এসে সবেমাত্র বাসায় প্রবেশ করেছে সে। এমন সময় তার স্ত্রী সাজুগুজু করে সামনে এসে বলল,
– এই চলো আমরা পতেঙ্গা সীবীচ যাই?
– এখন!
– হ্যাঁ, এখন গেলে কি হবে?
– আমি সবেমাত্র বাসায় এলাম। সারাদিন খাটুনি করে এসেছি। একটু বসে সেবা করবে। তা না করে বাইরে যাবার জন্য রেডি হয়ে বসে আছো। এখনও মেয়েটাকে পর্যন্ত দেখিনি। বলি, এ আমার কপাল!
– বেশি কিছু কী চেয়েছি? কয় টাকাই বা খরচ হবে। আর মেয়ে তো ঘুমাচ্ছে।
– এখানে আবার টাকার কথা আসলো কেন?
– সব সমস্যা তো ওখানেই।
– তোমাকে আজও সংশোধন করতে পারলাম না।
– তার মানে আমি কি নষ্ট হয়ে গেছি?
– নষ্ট না হলে কোন সাংসারিক মেয়ে অফিস থেকে স্বামী আসলে তার সেবা না করে সন্ধ্যা সাতটার সময় সীবীচে যেতে চায়?
– তুমি মানুষ নও। মানুষের খোলসে একটা রোবট। তোমার মধ্যে কোন স্বাদ আহ্লাদ নেই। জীবনে তুমি শুধু টাকাই চিনলে। তোমার মধ্যে মন বলে কিছু নেই।
স্ত্রীর এমন কথায় ইমরান প্রচন্ড রাগে কথা বলতে পারে না। এক দৃষ্টিতে স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
ততক্ষণে স্ত্রী সামনে ভেনিটি ব্যাগটা রেখে ব্যস্ত গলায় বলল,
– দাও, আমাকে এক হাজার টাকা দাও।
– আমার কাছে এ মুহূর্তে এতো টাকা নেই।
– কতো আছে?
প্যান্টের পকেট থেকে মানিব্যাগটা বের করে ইমরান বলল,
– এখানে পাঁচশ বিশ টাকা আছে।
স্ত্রী ছো মেরে পাঁচশ টাকার নোটখানা নিয়ে হাসতে হাসতে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
ইমরান কয়েক মুহূর্ত নির্বাক থাকে। হঠাৎ হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।
তার কান্নার আওয়াজ শুনে পাশের বাসার ভাবী ছুটে আসেন।
চোখের সামনে আচানক ভাবীকে দেখে সে লজ্জায় মাথানিচু করে থাকে।
ভাবি তাকে আগ্রহ ভরা কন্ঠে বললেন,
– কী হয়েছে, ইমরান ভাই?
ইমরান নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন,
– না, কিছু না, ভাবী?
– তাহলে কাঁদলেন কেন?
– এমনিতেই
– এমনিতে কেউ কাঁদে না। নিশ্চয় কোন সমস্যা হয়েছে। আচ্ছা, ভাবীকে যে দেখতে পাচ্ছি না।
উনি কোথায়?
– ও সীবীচে গেছে।
– কখন?
– এইমাত্র।
– কার সাথে?
– একা।
ভাবী দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– এখন সন্ধ্যা সাতটা বাজে। আপনাকে এভাবে রেখে ভাবী কিভাবে সীবীচে যেতে পারেন। আমার মাথায় ঢুকছে না।
হঠাৎ কোমল গলায় বলল,
– আপনি মনে হয় এখনও কিছু খাননি। আহারে! মুখটা কেমন যেনো শুকিয়ে গেছে। আপনি বাথরুম থেকে হাতমুখ ধুয়ে ফ্যানের নিচে বসুন। আমি কিছু খাবার নিয়ে আসি।
– না থাক ভাবী, আপনি কেন শুধু শুধু কষ্ট করবেন।
– আহা! কষ্ট বলছেন কেন? আপনার ভাই দেশে থাকলে তো রোজই তাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিতাম। আফসোস! কারো স্বামী কাছে নেই। আর কেউ থাকতে মূল্যায়ন করে না।
এই কথা বলে ভাবি আবার নিজের বাসায় চলে আসেন।
ইমরান হঠাৎ ভাবে- ভাবীর কথাগুলো সন্দেহজনক। আমি তার সাথে তো এতোটা ফ্রীভাবে কখনও কথা বলিনি। তবে কি ভাবি আমাকে কিছু বোঝাতে চেয়েছেন?
এরিমধ্যে ভাবী প্লেটে করে বিরিয়ানি এনে যুœ করে তাকে খেতে দিলেন।
ইমরান কোন কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে খেতে লাগলো।
ভাবী এদিকওদিক একবার তাকিয়ে আস্তে করে বলল,
– ইমরান ভাই, কিছু মনে না করলে আপনাকে একটা কথা বলুাম।
– কী কথা বলতে পারেন।
– আপনার ভাই বিদেশ গেছে আজ প্রায় সাত বছর হয়ে গেলো। আমি বাসায় একা থাকি। আপনি এতো কাছে থেকেও কোনদিন উঁকি দিয়ে পর্যন্ত আমাকে দেখেননি। অথচ আপনি অফিসে চলে যাবার পর আপনার বাসায় লোকজন আসে। ঘন্টার পর ঘন্টা থেকে চলে যায়। আগে কোনদিন আপনাকে বলিনি। আপনি চাইলে আমার বাসায় আসতে পারেন।
এই কথা বলে ইমরান কোনকিছু বোঝে ওঠার আগে দ্রæত নিজের বাসার দিকে চলে যায় ভাবী।
ভাবীর মুখের কথাগুলো ইমরানের বুকে শেল হিসেবে বিঁধেছে।
সে আনমনে ভাবতে লাগলো- ভাবী, যে কথাগুলো বলে গেছেন সব উড়িয়ে দেবার মতো নয়। আজ ভাবী বলেছেন। কাল হয়তো আর কেউ বলবে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমার মানইজ্জত বলতে কিছুই থাকবে না।
এরিমধ্যে মোবাইল ফোনটা বাজতে দেখে ঝটপট কানের কাছে ধরে বলল,
– হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমি জুলি বলছি। রাতে খেয়ে শুয়ে থেকো। আমি আজ আসছি না। বীচ থেকে সোজা আম্মুর বাসায় গিয়ে উঠবো।
– তুমি এখন কোথায় আছো?
– সী বীচে।
– তোমার সাথে আর কে আছে?
– আমার বন্ধুরা আছে।
– কয়জন?
– হবে চার/পাঁচজন।
– নিজের দিকে খেয়াল রেখো।
– আচ্ছা।
রাত সাড়ে বারোটা বাজে। ইমরানের চোখে ঘুম আসে না। অজানা এক আশংকায় শুধু ঘরের মধ্যে পায়চারি করছে। চারিদিকে রাতের নির্জন নীরবতা। আশপাশের সব বাসার আলো নিভে গেছে। শুধু ইমরানের ড্রয়িং রুমের আলো জ্বলছে। একটু পরপর বেডরুমে এসে মেয়ের নিষ্পাপ মুখখানা দেখে অন্তর দহনে পুড়ছে। হায়রে! নিয়তি। স্বামী ও একমাত্র মেয়েকে বাসায় রেখে মা ছুটে গেছেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে।
এসব ভাবতে ভাবতে ইমরান নিঃশব্দে কেঁদে ওঠে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। মোবাইলের আলোতে তড়িঘড়ি করে সার্জার ফ্যানটা চালিয়ে মেয়ের দিকে করে দেন।
বেশ কিছুক্ষণ অন্ধকারের মধ্যে বসে থাকে সে। কিন্তু বিদ্যুৎ আসছে না। শেষে এক পা দুই পা করে ভাবীর ঘরের দিকে এগিয়ে এসে দরজায় কলিং বেলে আঙ্গুল চাপলেন। অমনি ঘরের ভিতর থেকে ভাবী বের হয়ে এসে বলল,
– কী খবর, ইমরান ভাই? ভাবী কি এসেছেন?
– না, আসেনি। কল করেছে। বলেছে রাতে আসবে না। বিদ্যুৎ চলে গেছে অনেকক্ষণ আগে। আপনার ভাবী মোমবাতি কোথায় রেখেছে আমি তা খুঁজে পাচ্ছি না। আপনার কাছে কি অতিরিক্ত মোমবাতি হবে?
ভাবী একটু ভেবে নিয়ে বলল,
– হবে। আপনি ভিতরে আসুন। মেয়ে কোথায়?
– ও ঘুমাচ্ছে।
– আপনি এখানে বসুন। আমি ওকে দেখে আসি।
এই কথা বলে ভাবী ইমরানের ঘরে এসে তার মেয়েকে দেখে আবার নিজের ঘরের দিকে চলে আসে। ইমরান তখনও সোফার এককোণে বসে আছে। ভাবী এসে তার গায়ের সাথে গা লাগিয়ে বলল,
– মেয়ে ঘুমাচ্ছে। জানেন? আমারও কিন্তু ঘুম আসছিলোনা। সারাক্ষণ চটপট করেছি। কেন জানি আজকের প্রতিটি মুহূর্ত আমার অন্য রকম লাগছে। আপনাকে কিছু বলতে চেয়েও আমি বারবার ব্যর্থ হয়েছি। আর পারছি না। তাই আপনার কাছে আমি নিজকে সঁপে দিলাম।
এই কথা বলে ভাবী ইমরানের কোলে নিজের মাথাটা রেখে চোখে চোখ রাখতে চায়।
ইমরান ভাবীর এমন আচরণে বাকশক্তি হারিয়ে ভাবীর চোখের দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে।
এই সুযোগে ভাবী দীর্ঘদিন ধরে পুষিয়ে রাখা যৌবনের ক্ষুধা নিবারণে মরিয়া হয়ে ওঠে।
ইমরানের কাছে সব ঘোরের মতো মনে হয়। সে মনে মনে ভাবে – ভাবী তার সাথে এমন করছে কেন? তবে এটাই কী একজন মানুষের আসল রূপ হতে পারে? একজন লোক তাকে ভালোবেসে বিয়ে করে সুখে রাখতে বছরের পর বছর বাইরে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এই তার প্রতিদান!
ইমরান নিজেকে স্বাভাবিক করে দাঁড়িয়ে বলল,
– ভাবী এ বড় অন্যায়। আপনার স্বামী সংসার আছে। আমারও আছে। আমাদের এভাবে কোন পাপচারে লিপ্ত হওয়া ঠিক হবে না। আপনি দরজাটা লাগিয়ে দিন। আমি চলে যাচ্ছি।
– আরেকটু থাকুন না। এখানে তো এখন আপনি আর আমি ছাড়া আর কেউ নেই। সমস্যা কোথায়? আপনার বৌ যদি অন্যকে….।
– ভাবী, আপনি আমাকে ভুল বুঝবেন না। এখানে কেউ না থাকলেও মনে রাখবেন আল্লাহ আমাদের সব কিছু দেখেন। তাঁর চোখে ফাঁকি দেয়ার কোন সুযোগ কি আমাদের আছে? তাছাড়া সামান্য দুনিয়ার সুখের জন্য কেন আমরা চিরসুখের জান্নাতকে হারাতে পাপাচারে লিপ্ত হবো?
ভাবী প্রচন্ড রাগে ক্ষীণ কন্ঠে বলতে লাগলেন,
– আপনার মতো করে যদি দুনিয়ার সবাই ভাবতো তাহলে দুনিয়ায় এতো সংঘাত হতো না। আপনাকে আর ডাকবো না। তবে আপনার মতো ভালো মানুষের কপালে দুঃখ আছে।
– ভাবী, আপনি আমাকে ভুল বুঝলেন।
– যান, আপনি চলে যান।
এই কথা বলে ভাবী জোরে দরজা লাগিয়ে দেন। ইমরান ভাবুক মনে মেয়ের শিয়রে বসে রইলেন। একটুপর বিদ্যুৎ আসে।
মেয়ের পাশে বালিশটায় মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে সে। একসময় তার চোখে ঘুম নেমে আসে।
সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে ওঠে মেয়েকে নিয়ে হাতমুখ ধুয়ে সকালের নাস্তা খেতে বসে। নাস্তা খাওয়া শেষে মেয়েকে পাশের বাসার ভাবীর কাছে রেখে অফিসের দিকে চলে যেতে লাগলো। ভাবী বেশ কিছুক্ষণ ধরে তার চলে যাবার পথে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
অফিসে একটানা একটা পর্যন্ত কাজ করার পর মধ্যাহ্ন ভোজনের বিরতি চলে। ইমরানের মন হঠাৎ আনমনে হয়ে যায়। এতো সময় হয়ে গেলো জুলি কেন কল দিচ্ছে না? তাহলে ও কি এখনও বাসায় আসেনি? ভাবীও আমার ওপর রেখে আছেন। মেয়েকে আবার তার কাছে রেখে এসেছি। সবকিছু এলোমেলো লাগছে।
এরপর অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরে আসে সে। বাবাকে কাছে পেয়ে মেয়ে দৌড়ে ছুটে আসে। পিছে পিছে ভাবীও আসেন।
ইমরানকে চিন্তিত থাকতে দেখে ভাবী বললেন,
– আজ এতো তাড়াতাড়ি চলে এলেন যে! ভাবীর কী খবর?
– ও রাতের পর আর কল দেইনি। খুব টেনশন লাগছে, ভাবী। ওর যদি কিছু হয়ে যায়।
– আপনি ঠিক বলেছেন। যে যুগ পড়েছে তাতে কি হতে কি হয়ে যায় তা বলা যায় না। আপনি ওনার আব্বা-আম্মার কাছে কল দিন।
– হ্যাঁ, ঠিকই তো।
এই কথা বলে প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করে শ্বাশুড়ির নাম্বারে কল দেয় সে।
বেশ কিছুক্ষণ রিং হয়। কিন্তু ওপার থেকে কেউ তা রিসিভ করছে না। আবার কল দেয়। এবারও কল রিসিভ করছে না। ইমরান খুব চিন্তায় হয়ে পড়ে।
পাশ থেকে ভাবী বলল,
– কী হলো? কেউ কথা বলছে না?
– না, রিং হচ্ছে। কিন্তু কেউ ফোন রিসিভ করছে না।
– মনে হয় ব্যস্ত আছেন।
– তা হতে পারে।
এরইমধ্যে মোবাইলে রিং বেজে ওঠলো। ওপার থেকে
শ্বাশুড়ির কন্ঠ শুনে ইমরান মোলায়েম কন্ঠে বলল,
– আম্মা আসসালামু আলাইকুম, জুলি কোথায়? ওকে একটু মোবাইলটা দিন। রাতে গেল আর কোন যোগাযোগ নেই। এদিকে আমি মেয়েকে একলা পাশের বাসার ভাবীর কাছে রেখে অফিসে গিয়েছিলাম।
– রাতে গেল মানে কোথায় গেল? কার সাথে?
– একা একা বেরিয়ে গেছে। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে। আমি বারণ করেছি। ও আমার কথা শুনেনি। যাবার সময় বলেছিল সীবীচে যাবে। আবার রাতে কল করে বলেছিল রাতে বাসায় না এসে আপনাদের বাসায় উঠবে।
– কই আমাদের বাসায় তো আসেনি। কলও তো করেনি। তাহলে ও গেল কোথায়? আচ্ছা তুমি একটু খোঁজ নিয়ে দেখো। এদিকে আমরাও আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খবর নিয়ে দেখি।
– জ্বি, আম্মা।
মোবাইলে কল কেটে দিয়ে হতাশাগ্রস্ত চোখে ভাবীর দিকে তাকায় সে।
ভাবী তার চিন্তিত মুখ দেখে জিজ্ঞেস করলো,
– কী হয়েছে? কথা বলছেন না যে?
– ও তাদের বাসায়ও যায়নি।
– তাহলে!
– আমি এখন কী করবো, ভাবী? আমার মাথায় কোন কিছুই আসছে না।
– আপনি এক কাজ করেন- আপনার শ্বশুর-শ্বাশুড়িদের সাথে দেখে করে তাদের সাথে নিয়ে ভাবীকে খুঁজতে বের হন। আর মুন মামণি আমার কাছে থাক।
– হ্যাঁ, আপনি ঠিক কথাই বলেছেন। আমি তাহলে সেদিকে যাচ্ছি।
এই কথা বলে ইমরান শ্বশুর বাড়ি চলে আসে। সবার সাথে কথা বলে আরও চিন্তিত হয়ে পড়ে। কেউ জুলির কোন খবর দিতে পারেনি।
এরপর সবাই মিলে সীবীচে চলে আসে। এদিকসেদিক খোঁজাখুঁজি করেও জুলির কোন সন্ধান মিলেনি। এরিমধ্যে অদূরে মানুষের ভীড় দেখে তারা এগিয়ে আসে। ইমরান ভীড় ঠেলে সামনে যেতেই দেখে জুলির রক্তাক্ত লাশ। দীর্ঘসময় পানিতে পড়ে থাকায় শরীর বেশ ফুলে গেছে। ইমরান হঠাৎ হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। তার কান্নার আওয়াজ শুনে জুলির বাবা-মা ভীড় ঠেলে সামনে চলে আসেন। চোখের সামনে নিজেদের মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা গগনবিদারী আর্তনাদ শুরু করেন। তাদের কান্নায় সাগরপাড়ের আকাশ বাতাস ক্রমশ ভারী হয়ে ওঠে।