পথচারীদের জন্য ইফতারি নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন তারা

177

ইফতারের বাকি মাত্র ২০ মিনিট। এরই মধ্যে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকা হয়ে মুরাদপুরের দিকে যাওয়া কিংবা মুরাদপুর থেকে আসা পথচারীদের চোখ আটকে যায় টেবিলে সাজানো ইফতারির পসরা দেখে। ইফতার সামগ্রী ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেশ কয়েকজন তরুণ। পেছনে ব্যানারে লেখা আছে, ‘৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম এর উদ্যোগে রোজাদার পথচারীদের জন্য ইফতার আয়োজন।’ পথচলতে চলতে ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসলেও যারা নানা কারণে বাড়ি পৌঁছাতে পারেন না তাদের জন্য শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোরশেদ আলম এ উদ্যোগ নিয়েছেন।
মুরাদপুর থেকে দুই নম্বর গেট পর্যন্ত সড়কজুড়ে ইফতারের সময় শ্রমজীবী কিংবা পথচারীরা এখান থেকে বিনামূল্যে ইফতারি সংগ্রহ করা শুরু করেন। আবার দায়িত্বে থাকা তরুণরা সিএনজি অটোরিকশা বা রিকশা চালকদের কাছে ইফতারি বিতরণ করছেন। এটি হচ্ছে গত ২০ রমজানের দৃশ্য। তবে এ পথচারীদের মাঝে এ ইফতারি বিতরণ শুরু হয়েছে প্রথম রমজান থেকে এবং শেষ রমজান পর্যন্ত এই সেবা চলবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর মোরশেদ আলম। এ আয়োজন সম্পর্কে পূর্বদেশকে তিনি বলেন, যানজটে আটকে কিংবা নানা কারণে অনেক মানুষ ইফতারের সময়েও রাস্তাঘাটে থেকে যান। তাদের জন্য বিনামূল্যে ইফতারি বিতরণের ব্যবস্থা করেছি।
এ সময় ইফতার সেবায় নিয়োজিত তরুণরা সবার হাতে ইফতার সামগ্রী হিসেবে পানি, খেজুর, পেঁয়াজু, বেগুনী, চপ, মুড়ি, জিলাপিসহ নানা খাবার তুলে দেন। ব্যস্ত এই শহরে সময়ের জালে আটকে পড়ে অনেকে সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন না। তাদের জন্য এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করেছেন শুলকবহর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোরশেদ আলম। তিনি পূর্বদেশকে বলেন, বন্দরনগরীতে নানা পেশাজীবী মানুষের বসবাস। কর্মব্যস্ত মানুষ ছুটে চলেন শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। নানা কারণে অনেক মানুষ ইফতারের সময়ও বাড়িঘর কিংবা বাসা পৌঁছাতে পারেন না। এসব মানুষের কথা বিবেচনা করে ইফতারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত ইফতারির ব্যবস্থা আছে। পরিবহনে থাকাকালীন ইফতারের সময় হয়ে গেলে খুব সহজেই একজন রোজাদার ইফতার করে নিতে পারবেন। প্রতিদিন এভাবে দুই শতাধিক মানুষকে ইফতারি দেওয়া হয়।
ইফতারি নিতে আসা এক পথচারী জানান, অফিস শেষে এ পথ দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় এখান থেকে ইফতারি নিয়ে
যান তিনি। রাস্তায় ইফতারের সময় হলে এগুলো দিয়েই ইফতারি সারেন।
২নং গেটের মতো এমন ইফতারের আয়োজন থাকে নগরীর মুরাদপুর মোড়ে। রিকশাচালকরা এখান থেকে ইফতারি সংগ্রহ করে রিকশায় বসেই ইফতার সারেন। এখানে কথা হয় সায়েদুর নামে এক রিকশাচালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, সারাদিন রোজা রেখে রিকশা চালিয়ে যে আয় হয় তাতে সংসার চলে না। ইফতারির দোকানে যাওয়ার সাহস হয় না। ইফতারির যে দাম তাতে আমাদের মতো গরিব মানুষের পক্ষে তা কেনা সম্ভব নয়। এখানে বিনামল্যে ইফতারি করতে পেরে ভালো লাগছে।
কাউন্সিলর মোরশেদ আলম জানান, শুলকবহর ওয়ার্ডে সারা বছরই ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। ৫ ধরনের পণ্য ন্যায্যমূল্যে গাড়িতে করে ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্পটে বিক্র করা হয়। আর ঈদ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ২০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রয় কর্মসূচি।