পটিয়ায় ৪০ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক ৪

250

ইয়াবা পাচারে নিত্যনতুন কৌশল বেছে নিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এবার তারা মোটরসাইকেল গ্যাং তৈরি করে লং ড্রাইভের নামে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা পাচার করছে। এ ধরনের একটি গ্যাংয়ের ৪ সদস্যকে ৪০ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি, পটিয়া সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীরের কৌশলী ভূমিকায় এ চক্রটি ধরে পড়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার মুজাফরাবাদ এলাকায়। উদ্ধারকতৃ ইয়াবার বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক এই তথ্য জানান।
অভিযানকালে ইয়াবা পাচারকারীদের কাছ থেকে ১ হাজার ২০০ ব্রিটিশ পাউন্ড ও ৬টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়েছে। ইয়াবা নিয়ে চার বাইকার কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসছিল বলে জানান পুলিশ সুপার।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের শরীফপুর এলাকার মো. আবদুল মান্নানের ছেলে মোজাম্মেল হক (৩০), চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মঘাদিয়া এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে মো. নুর নবী (২৪), সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া এলাকার মো. হুমায়ুন কবিরের ছেলে হাসমত কবির শাকিল (২১) ও নোয়াখালীর চাটখিল নোয়াখোলা এলাকার মো. ইব্রাহিম খলিলের ছেলে জাহেদুল ইসলাম রাতুল (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বিপুল সংখ্যক ইয়াবা নিয়ে একটি মোটরসাইকেল গ্রূপ তিনটি বাইক নিয়ে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে আসছে- এমন একটি তথ্য পান পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর। সংবাদের ভিত্তিতে তিনি এসআই মোবারক হোসেন, এসআই মো. খালেদ, এসআই রোকন উদ্দিন, এএসআই মেহেরাজ মাহামুদ ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া থানাধীন খরনা ইউপির মুজাফরাবাদ এলাকার মেসার্স নজরুল কোম্পানী অ্যান্ড পাম্প লি. এর সামনে চেকপোস্ট স্থাপন করেন। শনিবার বিকেল পাঁচটা ২০ মিনিটে সেই তিনটি মোটরসাইকেল চেকপোস্টের কাছাকাছি আসলে তাদের থামার সংকেত দেয়া হয়। কিন্তু মোটরসাইকেল আরোহীরা দ্রূততার সাথে দিক পরিবর্তন করে দ্রæত গতিতে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় এএসপি মো. জাহাঙ্গীর তার ফোর্স নিয়ে কৌশল করে চট্টমেট্রো-ল-১২-০১৪৬ এবং চট্টমেট্রো-ল-১৪-০৩৯৬ নম্বরের দুটি মোটরসাইকেল আটক করতে সক্ষম হন, গ্রেপ্তার করা হয় মোটরসাইকেল আরোহী চারজনকে। তবে অপর মোটরসাইকেলটির তিন আরোহী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের এবং মোটরসাইকেল তল্লাশি করে ৪০ হাজার পিস ইয়াবা, ১ হাজার ২০০ ব্রিটিশ পাউন্ড এবং ৬টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর বলেন, আমাদের কাছে সংবাদ ছিল কক্সবাজার থেকে ইয়াবা আসছে। পটিয়ার দুইটি স্থানে চেকপোস্ট করা হয়। তিনটি মোটরসাইকেল করে তারা এসব ইয়াবা নিয়ে আসছিল। একটি মোটরসাইকেল সামনে ছিল যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখলে অপর দুইটি মোটরসাইকেলকে সতর্ক করতে পারে। কিন্তু আমরা আমাদের কৌশলে তাদের গ্রেপ্তার করি। তিনি জানান, গ্রেপ্তার মোজাম্মেল হক, মো. নুর নবী ও হাসমত কবির শাকিলের ব্যাগ তল্লাশি করে ৩৬ হাজার পিস ও জাহেদুল ইসলাম রাতুলের পকেট থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তাদের কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়।
মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, পাচারকারীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে মোটরসাইকেল গ্যাং হিসেবে লং ড্রাইভে যেত। এর আগেও তারা একই কায়দায় ইয়াবা নিয়ে এসেছে বলে জানতে পেরেছি।
গ্রেপ্তারকৃত পাচারকারী ও পালিয়ে যাওয়া তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।