পটিয়ায় রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে টপসয়েল

117

পটিয়ায় এবার রাতের আঁধারে চাষাবাদের জমি থেকে টপ সয়েল কাটছে কয়েকটি সিন্ডিকেট। তবে টপ সয়েল কাটার সবচে বেশি তান্ডব চলছে উপজেলার হাইদগাঁও, কচুয়াই, মুজাফরাবাদ, খরনা ও বরলিয়া এলাকায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এতোদিন দিনের বেলায় চুরি করে টপ সয়েল কাটা হতো। বিষয়টি হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নজরে এলে তা বন্ধে কঠোর নির্দেশ দেন। এসব বন্ধে কঠোর হওয়ায় হুইপ চট্টগ্রাম এবং দেশের বাইরে গেলে টপ সয়েল কাটার মহোৎসব চলতো। এখন কৌশল পাল্টে টপ সয়েল কাটা চলছে রাতের বেলায়। তাতে থানা পুলিশের কোন কোন অফিসারের আঁতাত রয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, টপ সয়েল কাটার বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্থানীয় এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এ প্রেক্ষিতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারীর কারণে কিছুদিন টপ সয়েল কাটা বন্ধ থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে রাতের বেলায় কাটা হচ্ছে টপ সয়েল। বিভিন্ন লোকজনের দাবি সকলকে ঘুমন্ত রেখে নিরাপদে টপ সয়েল কেটে নিতেই এ কৌশল নিয়েছে সিন্ডিকেট।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, সবশেষ গত বুধবার রাতে উপজেলার কচুয়াই কালা মসজিদ এলাকায়, মুজাফরাবাদের পশ্চিম দিকে স্টিল ব্রিজ এলাকায়, হাইদগাঁওয়ের কাট্টলীপাড়া এলাকায় এবং বরলিয়া এলাকায় টপ সয়েল কাটার মহোৎসব চলে।
স্থানীয়রা জানান, অধিকাংশ সিন্ডিকেট টপ সয়েল কাটার কাজে ব্যবহার করছে এসকেবেটর। সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষাবাদের জমি থেকে উর্বর মাটি (টপ সয়েল) কেটে নিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছে। উর্বর মাটি বিক্রির ফলে জমি ফসলের উৎপাদন ক্ষমতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন, তাদের বাধ্য করে সিন্ডিকেট স্বল্প দাম দিয়ে টপ সয়েল কেটে নিচ্ছে। আর এসব জমি এমনভাবে গর্ত করা হচ্ছে যাতে পার্শ্ববর্তী জমিতে পানি ধারণের সুযোগ না থাকে এবং চাষাবাদ ব্যাহত হয়। এ কারণে বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী জমির মালিকও সিন্ডিকেটের কাছে তার জমির টপ সয়েল তুলে দিতে বাধ্য হন।
জানা যায়, সিন্ডিকেট টপ সয়েল কাটাকে আইনগত বৈধতা দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসি ল্যান্ড ও পটিয়া থানা ওসির কাছে একটি আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয় চাষাবাদের জন্য জমির উঁচু নিচু অবস্থান সমান করা হবে। কিন্তু কোন মাটি পরিবহন বা অন্যত্র নেয়া হবে না। এভাবে কৌশলে বিভিন্ন সময় অনুমতি হাতিয়ে নেয়ার পর মাটি বিক্রির ঘটনা ঘটে। এখন উপজেলা প্রশাসন অনুমতি প্রদানে আরো কঠোর হয়ে উঠে।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান জানান, টপ সয়েল কাটা বন্ধে প্রশাসন খুবই আন্তরিক। হুইপ এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। রাতের বেলায়ও যদি সঠিক তথ্য পাওয়া যায় তবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, রাতে তিনি বিষয়টি জানার পর এক অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু গাড়িগুলো পালিয়ে গেছে বলে তাকে জানানো হয়। ওই অফিসার গাড়ি ও স্কেবেটর মাটি কাটা অবস্থায় পেয়েছেন, এরপরও তিনি আটক করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে কোন অফিসার নয়, তিনি নিজেই অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন।