পটিয়ায় অজ্ঞাত রোগে মরছে মুরগি, খামারিরা সর্বস্বান্ত

61

পটিয়ায় অজ্ঞাত রোগে মরে যাচ্ছে বিভিন্ন ফার্মের মুরগি। গত এক সপ্তহের বেশি সময় ধরে উপজেলার আশিয়া এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বেশি। এতে সর্বস্বান্ত হয়েছে অনেক খামারি। অভিযোগ উঠেছে, খামারিরা লোকসান পুষিয়ে নিতে রোগে আক্রান্ত মুরগি প্রতিটি ৫০ টাকা দরে গ্রামের লোকজনের কাছে বিক্রি করছেন।
এদিকে প্রতিদিন এক ফার্ম থেকে অন্য ফার্মে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এ ঘটনায় আশপাশের ফার্ম মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপজেলার আশিয়া এলাকার মুরগির ফার্মের মালিক ফারুক জামান ও আকবর আলী জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে এলাকার বেশ কয়েকটি ফার্মের মুরগি মারা গেছে। একের পর এক ফার্মে এ রোগ ছাড়াচ্ছে।
এক সপ্তাহে এক লাখের বেশি মুরগি মারা গেছে শুধু আশিয়া এলাকায়। মুরগি মরে যাওয়ায় এ শিল্পে ধস দেখা দিয়েছে। রোগ নির্ণয় করতে না পারায় ফার্মের মুরগির মৃত্যু থামানো যাচ্ছে না।
এতে ফার্ম মালিকদের মাথায় হাত পড়েছে। অনেক খামারে লাখ লাখ টাকার মুরগি মরে যাওয়ায় ফার্ম মালিকরা পথে বসেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ফার্ম মালিকরা বলেন, বেশিরভাগ ফার্মের মুরগি হলুদ রং-এর পায়খানা করে এক থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। কিছু কিছু ফার্মের মুরগি প্রথমে ঝিমুচ্ছে, খাবার খাচ্ছে না। এসব মুরগি সাদা ও রক্তমাখা পাতলা পায়খানা করে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে।
অনেক ফার্ম মালিকের ধারণা, বার্ড ফ্লুর মতো কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে এসব মুরগি মারা যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রোগে আক্রান্ত এসব মুরগি ৫০ টাকা দরে প্রতিটি গ্রামের লোকজনের কাছে বিক্রি করছে। এ কারণে মানুষ এ রোগে আক্রান্তর হতে পারে- এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এছাড়া কিছু ফার্মের মালিক মরা মুরগি মাটিচাপা না দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দিচ্ছেন। এ কারণে গৃহপালিত ছাড়াও বিভিন্ন পশু-পাখি এ রোগের আক্রান্ত হতে পারে।
ফার্ম মালিক মোহাম্মদ মনুছর আলম জানান, ফার্মের মালিকদের অবহেলা ও সময়মত ভ্যাকসিন না দেয়ায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, নিয়মিত ভ্যাকসিন না দিলে আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময়ে ঠান্ডা, গরম এবং ধূলোবালিতে আক্রান্ত হয়ে মুরগির মধ্যে সিআরডি, সিসিআরডি এবং রাণীক্ষেত রোগের সংক্রমণ ঘটে। হয়ত এসব ফার্মের মুরগির বেলায় তাই ঘটেছে।
ভেটেরিনারি চিকিৎসক মোহাম্মদ তারেক জানান, তিনি কয়েকটি মুরগি দেখেছেন। এতে তার মনে হয়েছে বার্ড ফ্লু নয়, এসব মুরগি অবহেলার কারণে রাণীক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়া না হলে এবং রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথ নিয়মে না হলে এ সময় এমন রোগের প্রকোপে আক্রান্ত হতে পারে।