পটিয়ার মুন্সেফ বাজার ইজারা নিয়ে বিরোধ

187

পটিয়ার পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী মুন্সেফ বাজারের দ্বিতীয় তলা দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার পর সম্প্রতি তা ইজারা দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে গত সোমবার রাস্তায় নামেন ব্যবসায়ীরা। ওই সময় ব্যবসায়ীরা মেয়রের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী আচরণের অভিযোগ তুলে এক ব্যক্তির কাছে পুরো ফ্লোর ইজারা দেয়ার প্রতিবাদ ও তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহবান জানান। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে পৌর মেয়রের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মেয়র বলেন, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ কর্তৃক গত ৭ বছরে মুন্সেফ বাজার কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বাজার বসানো এবং কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের নামে বরাদ্দের জন্য কোন ধরনের আবেদন করেন নি। সম্প্রতি দ্বিতীয় তলা ইজারার জন্য কয়েক দফায় দরপত্র দেয়া হলেও তাতে কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীরা কোন ধরনের আবেদন করেন নি। তৃতীয় দফায় মাত্র একজন অংশগ্রহণ করার পর তাকে ওই ফ্লোর বরাদ্দ দেয়া হলে কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীরা আন্দোলনে নামেন। ওই আন্দোলন কতটুকু যৌক্তিক প্রশ্ন রাখেন মেয়র। বৈঠকে পৌরসভা থেকে দ্বিতীয় ফ্লোর বরাদ্দের আবেদন না করে আন্দোলন করা ব্যবসায়ীদের ভুল ছিলো বলে স্বীকার করে নেন। এরপর তারা এ বিষয়ে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার আহবান মেয়রের কাছে।
জানা যায়, পটিয়া পৌর সদরের মুন্সেফ বাজাস্থ কিচেন মার্কেটের দ্বিতীয় তলা কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের পরিবর্তে এক ব্যক্তির কাছে ভাড়ায় লাগিয়তের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা গত সোমবার মানববন্ধন করেন। এ সময় তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করে অবিলম্বে দ্বিতীয় তলা ভাড়ায় লাগিয়ত চুক্তি বাতিলের দাবি জানান। মানববন্ধনে ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, শুকর আলী মুন্সেফ বাজার ঐতিহ্যবাহী একটি বাজার। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বাজারটি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ধ্বংস করতে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছে। দিন দিন বাজারে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রেতার সংখ্যা। কিন্তু পটিয়া পৌরসভার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির পরিবর্তে এক ব্যক্তির কাছে ইজারা দেয়ার মাধ্যমে বাজারটি ধংসের পায়তারা করছে।
মানববন্ধনের পর সোমবার ব্যবসায়ীরা পটিয়া পৌরসভার কাছে ওই ফ্লোর বরাদ্দের আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার পৌরসভাস্থ মেয়রের কার্যালয়ে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে মেয়র বলেন, রাস্তার পাশ থেকে ভাসমান ব্যবসায়ীদের দ্বিতীয় ফ্লোরে বসানোর জন্য গত ৭ বছর ধরে তাগাদা দেয়া হয়। কিন্তু তাতে তারা কোন ধরনের সাড়া দেন নি। ফ্লোরটি বরাদ্দের জন্য পটিয়া পৌরসভার কাছে কোন ধরনের আবেদন করেন নি। ফ্লোরটি দীর্ঘদিন খালি পড়ে থাকায় পত্রিকায় দরপত্র আহবান করে একাংশ ইজারা দেয়া হয়। এরপর ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ জানান। এতোদিন ধরে কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীরা কেন ওই ফ্লোর বরাদ্দের আবেদন করেন নি তা মেয়র উপস্থিত ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চান। ওই সময় ব্যবসায়ীরা তাদের ভূল স্বীকার করেন।
ওই সময় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের পক্ষে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি পটিয়া শাখার সভাপতি এমএ ইউছুপ, দোকান মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ওসমান গণি খসরু, মুন্সেফ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম খোকন বিষয়টি তাদের প্রক্রিয়াগত ভুল স্বীকার করে বিষয়টি সমাধানের আহবান জানান। ওই সময় ব্যবসায়ীরা এক ব্যক্তির নামে প্রদত্ত ইজারা বাতিল করে দ্বিতীয় ফ্লোর কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের জন্য উপযোগী করে দিলে বাৎসরিক ৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত পৌর কোষাগারে প্রদানের প্রস্তাব করেন। বৈঠকে মেয়র বিষয়টি নিয়ে ইজারাদারের সাথে আলোচনা করে সমাধনের পথ খুঁজে দেখার আশ্বাস দেন।