ন্যায়বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা পরিবারের

42

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রদলকর্মী আবিদুর রহমান হত্যায় ন্যায়বিচার চেয়ে তার পরিবার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ হস্তক্ষেপ কামনা করে আবিদুরের পরিবার। আবিদ হত্যা মামলার সব আসামি খালাস পাওয়ায় ‘সংক্ষুব্ধ’ পরিবার উচ্চ আদালতে আপিল করবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে আবিদের ভাই জিল্লুর রহমান বলেন, আবিদকে তারই সহপাঠী ও সিনিয়র ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা হকি স্টিক, লাঠি, স্ট্যাম্প ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। ছাত্র সংসদ নামের টর্চার সেলে আবিদের ওপর সন্ত্রাসীরা তিন-চার ঘণ্টা নির্যাতনের খবর পেয়েও কলেজ প্রশাসন আবিদকে বাঁচাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষে সেদিন তাকে ধরে নেওয়া হয়। চমেক হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা না করিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনে বাধ্য হয়ে ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর সকালে তাকে চমেকের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। ২১ অক্টোবর রাতে আবিদ মারা যান। ঘটনায় জড়িতদের বাঁচাতে এবং আন্দোলন থামাতে তখন অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
তিনি বলেন, বুয়েটছাত্র আবরার হত্যার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ও বুয়েট প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু আবিদ হত্যার পর চমেক প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। খুনিদের প্ররোচনায় এবং কলেজ প্রশাসনের ইন্ধনে ২০১২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দেওয়া চার্জশিটে আসামিদের মধ্যে ১০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। ওই চার্জশিট দেওয়ার কোনো খবর মামলার বাদি পাননি বলেও দাবি করেন জিল্লুর রহমান। আমরা এই রায়ে সংক্ষুব্ধ বিধায় উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি আমরা উচ্চ আদালতে আবিদ হত্যার ন্যায়বিচার পাবে। আর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
আবিদের বোন মোরশেদা ইয়াসমিন বলেন, আবরারকে যেভাবে হত্যা করা হয় সেভাবে আবিদকেও হত্যা করা হয়। যদি আবিদ হত্যার বিচার হত তাহলে আবরার হত্যা হত না। আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন খুনি তো খুনিই, সব খুনির বিচার হবে। আমরা ভাইয়ের খুনের বিচার চাই। সংবাদ সম্মেলনে সন্তান হত্যার বিচায় চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবিদের মা সৈয়দুন্নেসা।
সংবাদ সম্মেলনে আবিদের আরেক ভাই মনসুরুল আহমেদ, বোন সাজেদা ইয়াসমিন, শাহেদা ইয়াসমিন ও ভগ্নিপতি সোহেলও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদকে ছাত্রলীগকর্মীরা পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। দুইদিন পর (২১ অক্টোবর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ওই ঘটনায় আবিদুরের মামা নেয়ামত উল্লাহ চৌধুরী বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় চমেক ছাত্রলীগের ভিপি মফিজুর রহমান জুম্মান এবং জিএস হিমেল চাকমাসহ ২২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।