নৌকার বিপক্ষে গিয়ে তোপের মুখে পলক

43

কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের তোপের মুখে পড়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গতকাল শনিবার বিকালে শহরের স্টেশন এলাকায় নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এই ঘটনা ঘটে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মালেক শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অমান্য করে নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কাজ করায় তিনি তোপের মুখে পড়েন।-খবর বাংলা ট্রিবিউনের
মালেক শেখ ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই বর্ধিত সভায় জেলার সাত উপজেলা ও আট পৌর আওয়ামী লীগ নেতারা ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য রাখেন। দলের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন বক্তারা। একপর্যায়ে সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বক্তব্যের পালা এলে প্রতিবাদ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল। তিনি দাবি করেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিংড়ায় নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান শফিকুল ইসলাম শফিক। কিন্তু, ওই সময় পলক নৌকার বিরোধিতা করে তার পছন্দের অপর এক প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেন। এছাড়া লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের এমপি শহিদুল ইসলাম বকুল নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে তার আপন ভাই ওহিদুল ইসলাম গকুলের পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেন। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর আসনের এমপি আব্দুল কুদ্দুস বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর বিপক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন। শিমুলের বক্তব্যকে সমর্থন করেন উপস্থিত নেতারা। তারাও এমন কাজের প্রতিবাদ করে এসব নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন। পরে পলক ও বকুলকে বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি। বিষয়গুলো সুষ্ঠু তদন্ত করে ও শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কাউন্সিল সম্পন্ন করতে জেলা আওয়ামী লীগকে দায়িত্ব দেন উপস্থিত নেতারা।
বর্ধিত সভার এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে আব্দুল কুদ্দুসের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
অভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে জুনাইদ আহমেদ পলকের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি পরে মন্তব্য করবেন বলে জানান।
এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের এমপি শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন, তার সুপারিশ করেছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা; যাদেরকে স্থানীয় মানুষ পছন্দ করে না। তার ও আপন ভাই গকুলের এলাকায় সাধারণ মানুষদের মধ্যে সুনাম রয়েছে। তিনি দলীয় নির্দেশ মেনে গকুলের পক্ষে কোনও কাজ করেননি বরং নিরপেক্ষ থেকেছেন। গকুল তার নিজ যোগ্যতায় নির্বাচিত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নাটোর জজকোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পলক, কুদ্দুস আর বকুল যে নৌকার বিপক্ষে উপজেলা নির্বাচনে প্রকাশ্যে কাজ করেছে, তা সবাই জানে। এটা চন্দ্র-সূর্যের মতই সত্য। অভিযোগ উত্থাপনের পরও বক্তব্য দিতে দিলে বর্ধিত সভায় মতানৈক্য আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারতো। তাই তাদেরকে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়নি।