নোয়াখালের সাড়ে তিনশ মিটার দখলমুক্ত

77

খাল দখলমুক্ত করার অভিযানের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার নোয়াখালের ওপর গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে সিডিএ। ৮৬টি অবৈধ স্থাপনা থাকা এ খালটির ১৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। দখলমুক্ত করা হয়েছে সাড়ে তিনশ মিটার খাল। তিনদিনের মধ্যে পুরো খালটি দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা আছে সিডিএ’র। এর আগে বুধবার রাজাখালী খালের ২৬টি স্থাপনা উচ্ছেদ করে এক কিলোমিটার খাল উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘মেগা প্রকল্প’ বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুল আলম চৌধুরী।
সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আহমেদ মাঈনুদ্দিন বলেন, অভিযানের দ্বিতীয় দিন নোয়াখালে উচ্ছেদ অভিযান করে প্রায় ১৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি দ্বিতল ভবন, একতলা ভবন ও সেমিপাকা ঘর রয়েছে।
তিনি বলেন, নোয়াখাল অনেক বড় খাল, স্থাপনাও বেশি। খালটিতে ৮৬টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। আমরা ভারি যন্ত্রপাতি আনতে পারিনি বলে জোরালেভাবে অভিযান পরিচালনা করতে পারিনি। বৃহস্পতিবার ভারি যন্ত্রপাতি নিয়ে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে। পুরো খালটি দখলমুক্ত করতে তিনদিন সময় লাগবে। আমাদের এ অভিযান নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।
সিডিএ’র তথ্য অনুযায়ী নোয়াখালের দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮০ কিলোমিটার। বিএস খাল অনুসারে অবৈধ দখল আছে ৭ দশমিক ১২৪ একর। প্রস্তাবিত খালের ডিজাইনে অন্তর্ভুক্ত অবৈধ দখলকৃত জমি আছে দশমিক শূন্য দশ একর। খালের তীর বরাবর প্রস্তাবিত রাস্তায় অন্তর্ভুক্ত অবৈধ দখলকৃত জমি আছে এক দশমিক ২৬৫ একর। খালের ডিজাইনে অন্তর্ভুক্ত অবৈধ স্থাপনা আছে ৮৬টি এবং খালের তীর বরাবর প্রস্তাবিত রাস্তায় অন্তর্ভুক্ত অবৈধ স্থাপনা আছে ৮৯টি। অবৈধ এসব স্থাপনার মধ্যে বহুতল ভবনসহ একাধিক সেমিপাকা ঘর রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গৃহীত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সিডিএ’র সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর খালের উভয় পাশে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করার কাজ শুরু করে। পাশাপাশি খাল থেকে ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রমও শুরু হয়। ডিপিপি অনুযায়ী গৃহীত এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০১৮ সালে ৩৬ খালের মাটি অপসারণসহ ৩০০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ২০২০ সালের মধ্যে নগরে ৩৬টি খাল খনন, খালের পাশে ১৭৬ কিলোমিটার প্রতিরোধক দেয়াল, ৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপ নানা অবকাঠামো নির্মাণ করার কথা রয়েছে।