নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা ধ্বংসাত্মক হলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়

35

রাজনীতিতে সংগঠনের নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকা স্বাভাবিক উল্লেখ করে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নেতৃত্বের ইতিবাচক প্রতিযোগিতা থাকলে সংগঠন উপকৃত হয়, গতিশীল ও শক্তিশালী হয়। কিন্তু প্রতিযোগিতা যদি ধ্বংসাত্মক হয় তাহলে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা ইতিবাচক প্রতিযোগিতা প্রত্যাশা করি। আপনি সংগঠনের পতাকাতলে পাঁচজন আনলে, আমি ছয়জন আনবো। সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির সঙ্গে আমরা যাতে বিন্দুমাত্রও না জড়াই। তাহলে কোনো ষড়যন্ত্র আলোর মুখ দেখবে না।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ২১ আগস্ট বেগম আইভি রহমানসহ শহীদদের স্মরণে দোয়া, মিলাদ মাহ্ফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। গতকাল বুধবার জেলা পরিষদ মিলনায়তনে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি নইম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, অ্যাড. সুনীল সরকার, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রমুখ।
মেয়র বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য ঠান্ডা মাথায় ষড়যন্ত্র করে, চক্রান্ত করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞে আইভি রহমানসহ ২৪ জন শহীদ হয়েছে, দুই শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অনেক জাতীয় নেতা আহত হয়েছেন। তাদের শরীরে বোমার স্পিøন্টার রয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমত থাকায় শেখ হাসিনা রক্ষা পেয়েছেন।
প্রকাশ্য দিবালোকে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা দুঃসাহসী ঘটনা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, তৎকালীন বিএনপি সরকার জজ মিয়া নাটক সাজানোর চেষ্টা হয়েছিল। আলামত নষ্ট করে অপকর্ম আড়ালের চেষ্টা করেছিলো। মামলা নিতে গড়িমসি করেছে, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলো। এর থেকে প্রমাণ হয়-খালেদা জিয়ার সরকার এ হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলো। তারেক জিয়া পরিকল্পিতভাবে এ হামলা করেছিলো। তাদের ভরসা ছিলো সরকার সমর্থন দেবে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। এ হামলার পরও একই কাজ করতে চেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু করতে অনেক চেষ্টাই করেছে বিএনপি। কিন্তু জনগণ থেকে আওয়ামী লীগকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। ২১ বছরের দুঃশাসন, পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ পরিচালনার অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্দোলন-সংগ্রাম করে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে যে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ভিশন ঠিক করেছেন। তার নেতৃত্বে আমরা যদি অর্পিত নাগরিক দায়িত্ব দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পালন করতে পারি তবে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা, শেখ হাসিনার স্বপ্নের রাষ্ট্র গড়া আমাদের লক্ষ্য। আমাদের আত্মার বন্ধন সুদৃঢ় হোক এটাই চাই। যেকোনো পরিস্থিতিতে যাতে শক্ত অবস্থানে থাকতে পারি সেটাই মূল লক্ষ্য। ঐক্যবদ্ধভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং খুনিদের আশ্রয় না দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত সৃষ্টির দাবি জানান।