নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু উত্তোলন চলছেই

78

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদা নদী থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে হাটহাজারীর নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়ন যুবলীগ আহব্বায়ক মোহাম্মদ আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে হালদার তীর রক্ষাবাঁধ ও তীরবর্তী বসতঘরগুলো। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানা গেছে, হালদায় প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে কার্প জাতীয় (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ) মা-মাছ ডিম ছাড়ে। এ সময় রাউজান-হাটহাজারীর ডিম সংগ্রহকারী ও মৎস্যজীবীরা মাছের ডিমসংগ্রহ করেন। এ কারণে মা মাছ রক্ষায় হালদাকে মৎস্য অভয়াশ্রম ঘোষণা করে মৎস্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া এ নদীতে ছয় মাস যান্ত্রিক নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে। এছাড়া নাজিরহাট থেকে কালুরঘাট নদীর মোহনা পর্যন্ত সারাবছর মাছ শিকার ও বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়।
নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীরা জানান, নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়ন যুবলীগ আহব্বায়ক আলতাফ হোসেন সরকারি দলের প্রভাব কাটিয়ে প্রায় এক বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদা থেকে বালু উত্তোলন ও তা বিক্রি করছে। তার নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে ভাটার সময় নদী থেকে বালু উত্তোলন করে প্রতি ফুট বালু ১৩ টাকা দরে নাঙ্গলমোড়া, ছিপাতলী, গুমানমর্দ্দন, মেখল, মির্জাপুর এবং রাউজান ও ফটিকছড়িসহ চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন জিপ (চাঁদের গাড়ি) এবং যান্ত্রিক নৌযানে করে বিক্রি করছেন। ফলে হালদার মা মাছের প্রজনন দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। যান্ত্রিক নৌযান দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে হালদার গভীরতা বৃদ্ধি ও ভাঙনে এর তীর রক্ষাবাঁধ ও স্থানীয় বসতঘর নদীতে বিলীন হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার বিকালে নাঙ্গলমোড়ার গোলাম নবী বাড়ি এলাকায় বালু বিক্রির দৃশ্য দেখতে গেলে কথা হয় বালু উত্তোলনে নিয়োজিত ওই যুবলীগ নেতার কর্মচারী মো. দিদারের সাথে। তিনি জানান, এক সময় এখানে বালু উত্তোলন করতেন আবছার নামে এক ব্যক্তি। তবে এক বছর ধরে নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়ন যুবলীগ আহব্বায়ক আলতাফ হোসেন হালদা থেকে শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়ন যুবলীগ আহব্বায়ক আলতাফ হোসেন বালু উত্তোলনের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি হালদা নদী থেকে কোন বালু উত্তোলনও করি না, বিক্রিও করি না। তবে আমি যেহেতেু রাজনীতি করি, আমার কিছু ছেলে স্বল্প পরিমাণে বালু উত্তোলন করে। এসব বালু বিক্রি করে তারা প্রতি নৌকায় ৫শ টাকা করে আয় করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন মুঠোফোনে জানান, বালু উত্তোলন বিষয়টি আমার জানা ছিল না, এখন শুনেছি। আমি বালু উত্তোলন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।