নিখোঁজের ১৫ মাস পর বাসায় ফিরলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত

29

এক বছর তিন মাস নিখোঁজ থাকার পর সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান বাসায় ফিরেছেন। তিনি সুস্থ আছেন। তার পরিবার ও পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনিবার ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমরা শুনেছি মারুফ জামান বাসায় ফিরেছেন। আমাদের পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের বাসায় গেছেন।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
এদিকে মারুফ জামানের মেয়ে শবনম জামান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার বাবার ফিরে আসা নিয়ে। তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাবা সাড়ে ১৫ মাস বা ৪৬৭ দিন পর ফিরে এসেছেন। আমি ও আমার বোন কৃতজ্ঞ তাদের কাছে, যারা এই সময় আমাদের সহযোগিতা করেছেন।’
তিনি তার স্ট্যাটাসে এ বিষয়ে আর কিছু না জানতে চাইতে সবাইকে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি আর বেশি কিছু বলবেন না বলেও সেখানে জানিয়ে দিয়েছেন।
২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ধানমন্ডির ৯/এ বাসা থেকে বিমানবন্দর যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হন মারুফ জামান। এ ঘটনায় পরদিন দুপুরে তার মেয়ে সামিহা জামান ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নং ২১৩। জিডিটি থানা পুলিশ ও ডিবি তদন্ত করেছে। তবে তারা তার কোনও হদিস দিতে পারেননি।
ডিএমপির রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, ‘মারুফ জামান শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তার বাসার সামনে ঘোরাফেরা করছিলেন। তখন স্থানীয়রা তাকে দেখে চিনে ফেলেন। তারপর বিষয়টি মারুফ জামানের বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে জানায় স্থানীয়রা। তখন নিরাপত্তাকর্মী মারুফ জামানের মেয়েকে খবর দিলে, মেয়ে এসে তাকে বাসায় নিয়ে যায়।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উনি প্রথমে নিজের বাসা চিনতেছিলেন না। তাকে স্থানীয়রা বাসায় নিয়ে যায়। তার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা ওই বাসায় পাঠানো হয়েছিল। তবে মারুফ জামানের মেয়ে জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ আছেন, কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তার সঙ্গে দেখা করা যাবে না। এরপর আমাদের পুলিশ অফিসার চলে আসেন। তবে পুলিশ তার সঙ্গে শিগগিরই এ বিষয়ে কথা বলবেন।’
মারুফ জামান রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২০০৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভিয়েতনামে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি কাতারে রাষ্ট্রদূত ও যুক্তরাজ্যে কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি অবসর নেন। পরিবারের সঙ্গে তিনি ধানমন্ডির বাসায় থাকতেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি ধানমন্ডির বাসা থেকে প্রাইভেটকারে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার মেয়ে সামিহা জামান বিদেশ থেকে বিমানবন্দরে এসে পৌঁছানোর কথা ছিল। মেয়েকে আনতেই তিনি বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এরপর থেকেই তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। তিনি বিমানবন্দর যাননি, বাসায়ও ফিরে আসেননি। পরিবার তার কোনও খোঁজ না পেয়ে জিডি করেন। নিখোঁজ হওয়ার পরদিন মারুফ জামানের ব্যক্তিগত গাড়িটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৩০০ ফুট সংযোগ সড়ক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার পর নিখোঁজ ফারুক জামানের ছোট ভাই রিফাত জামান বলেছিলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না আসলে কী হচ্ছে? আমার ভাই নিজেই ড্রাইভ করে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। তিনি দুর্ঘটনায় পড়েছেন-এমন আশঙ্কা করেছিলাম প্রথমে। এখন তো অন্য কিছু মনে হচ্ছে। লোকজন বলাবলি করছে, ফোর্স ডিজ-অ্যাপিয়ারেন্স হতে পারে। কিন্তু আমার ভাই তো কোনও রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত না।’