নাজিরহাটে পুরোনো হালদা সেতু ভেঙে পড়ার আশঙ্কা

135

ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভা এলাকায় হালদা নদীর ওপর নির্মিত শতবর্ষী পুরনো হালদা সেতুটি গত বছরের জুনে প্রায় ৪ ফুট দেবে যায়। বিকল্প পথে ৩ কিলোমিটার ঘুরতে হয় বলে ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতুর ওপর দিয়েই চলাচল করছে মানুষ। এতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। তবু সেতুটি সংস্কার বা নতুন সেতু তৈরির কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
২০১৮ সালের ১৭ জুন বন্যার সময় মাঝ বরাবর ৩ থেকে ৪ ফুট দেবে গেলে সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যাতায়াতে বেকায়দায় পড়েন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন (এলজিইডি) ৩৩০ ফুট দীর্ঘ এ সেতুটি পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, বৃহত্তর ফটিকছড়ি এবং হাটহাজারী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ ও ট্রেন যাত্রীদের যাতায়াতের একমাত্র উপায় ছিল। সেতুটি দেবে যাওয়ায় স্থানীয়দের প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে নাজিরহাট বাজার, পৌর এলাকা এবং নাজিরহাটস্থ স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর মাঝখান বরাবর ৪ ফুট দেবে গেছে। সেতুর ওপরের কার্পেটিং স্থানে স্থানে উঁচুনিচু হয়ে গেছে।
এছাড়া কয়েকটি স্থানে লোহার পাটাতনগুলো ভেঙ্গে পড়েছে। অনেকগুলোতে মরিচা ধরে লক্কড় ঝক্কড় হয়ে গেছে। নিচের পিলারগুলো থেকে সরে গেছে মাটি। এছাড়াও সেতুতে একসাথে কয়েকজন উঠলে সেতুটি দোলনার মত দোলে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালে তৎকালীন ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড ফটিকছড়ি-হাটহাজারী উপজেলার সীমান্ত এলাকা নাজিরহাটে এ সেতুটি নির্মাণ করে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ডিনামাইট দিয়ে সেতুটির একাংশ ধ্বংস করে দেয়। পরে সরকার ১৯৭২ সালে সেতুটি মেরামত করে আবার যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করে। ১৯৯৪ সালে সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে দায়িত্ব শেষ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগ এ সেতুটি সম্প্রতি নাজিরহাট পৌরসভাকে বুঝিয়ে দিয়েছে বলে জানায়।
চট্টগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, সেতুটি নাজিরহাট পৌরসভাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই সেতুটির ব্যাপারে সওজের কোনো দায়দায়িত্ব নেই।
নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজ-উদ-দৌলাহ জানান, পুরনো সেতুটি সংস্কার করলেও কোনো লাভ হবে না। তাই নতুন সেতু নির্মাণে ফটিকছড়ি এলজিইডি থেকে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী এস এম হেদায়েত বলেন, ‘আমরা সেতুর ব্যাপারে একটি প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। প্রকল্প পরিচালক সেতু এলাকা পরিদর্শন করে এটি অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন। অনুমোদন পেলে এখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।’