নাইক্ষ্যংছড়ি-লামার খুটাখালীতে সেতু নির্মাণের দাবী

39

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার সীমান্তবর্র্তী পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রাচীনতম খুটাখালী খাল। দীর্ঘ সময় ধরে বিভক্ত রেখেছে দুই উপজেলার পাশাপাশি বাইশারী ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নকে। তাই স্থানীয়রা এই খালকে দুই ইউনিয়নের দুঃখ বলে অবহিত করেন। খুটাখালী খালে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলেই দীর্ঘদিনের যোগাযোগ সমস্যার সমাধান হবে এবং উন্নয়নের মুখ দেখবে প্রত্যঞ্চ অঞ্চলের অবহেলিত দুই ইউনিয়ন। চরম দুর্দশা কেটে যাবে হাজার হাজার মানুষের। এলাকাবাসী ওই খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবী জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সর্ব উত্তরের ইউনিয়ন বাইশারী। বাইশারী সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রাম কাগজিখোলা। খুটাখালী খালের ওপারেই লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের সাপের ঘারা বাজার। কাগজিখোলা এলাকার লোকজনদের ওই খাল পাড়ি দিয়ে সওদাপাতি ক্রয় করতে সাপেরঘারা বাজারে যেতে হয়। কাগজিখোলা গ্রামে একটি পুলিশ ফাঁড়ি, স্কুল-মাদরাসা, হাজার একর রাবার বাগান রয়েছে। খালের ওপারে কোন প্রতিষ্ঠান না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করতে এপারে আসতে হয়। বর্ষায় খাল দিয়ে চলাচলে পানি কমে যাওয়ার উপর নির্ভর করতে হয়। বর্তমানে টানা ৯ দিনের লাগাতার বর্ষণে খালটিতে পানির ¯্রােত থাকায় ওপারের স্কুল-মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যোগদান করতে সক্ষম হননি। তাতে তাদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান ঈদগড় হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওবাইদুল করিম।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ শাহজাহান জানান, বিভক্ত করে রাখা খুটাখালী খালের উপর ব্রিজ না থাকায় ৫ গ্রামের শত শত স্কুল ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষায়, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য, কৃষকরা ক্ষেত খামার, মানুষের জীবন মান উন্নয়নসহ সাংস্কৃতিক দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া দুই ইউনিয়নের যোগাযোগে ব্যাঘাত সৃষ্টিই হচ্ছে ওই খালটি। কাগজিখোলা পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ সদস্য মোঃ নেওয়াজ বলেন, ব্রিজটি নির্মাণ হলে দ্রæত মানুষের সেবা ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বাইশারী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, একটি মাত্র ব্রিজের অভাবে পুরো এলাকাটি আজ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় সাধারণ মানুষ আদিম যুগের মতো বসবাস করে আসছে। ব্রিজটি নির্মাণ হলে এলাকার কৃষকদের কৃষিপণ্য শাক-সবজি রবি শস্য, রাবার বাগানের উৎপাদিত রাবার সামগ্রী গাড়িতে করে আনা-নেওয়া অতি সহজ হবে এবং সরকারও প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব পাবে। বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন, খুটাখালী খালের উপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।