নতুন বছরে স্কুল উপহার পেল রাঙ্গুনিয়ার হালিমপুর গ্রামের শিশুরা

158

নতুন বছরে একটি স্কুল উপহার পেয়েছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের হালিমপুর গ্রামের শিশুরা। গত ১২ জানুয়ারি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে স্কুলের উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো গ্রামবাসীর। অনেকে জানিয়েছেন, স্কুলের অভাবে ছোটবেলায় তাদেরকে কত কষ্ট করতে হয়েছে। রোদে পুড়ে কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হত। দেরিতে পৌঁছানের কারণে শিক্ষকের কাছে শাস্তি পেতে হতো। দূরত্বের কারণে বিশেষ করে রক্ষণশীল পরিবারের অনেক মেয়ে পড়ালেখা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু হালিমপুরের নতুন প্রজন্মকে এখন থেকে আর এই কষ্ট করতে হবে না। কারণ, এখন তাদের বাড়ির সামনেই স্কুল। গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কথা মাথায় রেখে ‘আশোবা ওয়াজেদ প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামের এই স্কুলটি গড়ে দিয়েছেন এলাকার কৃতি সন্তান ডা. ওয়াকিল আহমেদ।
স্কুল উদ্বোধন উপলক্ষে পুরো গ্রামজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নতুন স্কুলের পাশাপাশি নতুন বই পেয়ে ভীষণ খুশি ছোট ছোট শিশুরা। অভিভাবকদের চোখেমুখেও ছিল এক ধরনের প্রশান্তির ছাপ।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট অর্থোপেডিক চিকিৎসক, গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. ওয়াকিল আহমেদ ইত্তেফাককে জানালেন, তার বাবা-মা ছিলেন শিক্ষানুরাগী। হালিমপুরের সব শিশুকে তারা নিজের সন্তানের মত ভালবাসতেন। গ্রামকে নিরক্ষরমুক্ত করার স্বপ্ন ছিল তাদের। বাবা-মায়ের স্বপ্নকে পূরণ করার মানসেই গড়ে তোলা হয়েছে আশোবা ওয়াজেদ প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার বলেন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় শিক্ষিতের হার, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবে ভাল হলেও হালিমপুর গ্রামটি শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে ছিল। স্কুলের অভাবে এলাকার শিশুকিশোররা কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়ালেখা করতো। এ কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অল্পতেই ঝরে পড়তো। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ এবং পশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি স্কুলটিকে এগিয়ে নিতে সমাজের স্বচ্ছল ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা কামনা করেন।