‘নগর ভবন’ প্রকল্প থেকে বিলাসবহুল গাড়ি বাদ

93

একটি আইকনিক ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ‘নগর ভবন’ নির্মাণে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এ লক্ষ্যে গতকাল ২০২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রাথমিক প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (আইপিইসি) সভায় উঠে। সভায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বিলাসবহুল পাজারো জিপসহ প্রায় ৩০ কোটি টাকার যান-যন্ত্রপাতি বাদ পড়েছে। এছাড়াও নগর ভবনে ‘অটোমেটেড’ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতসহ প্রকল্পব্যয় সংশোধনপূর্বক ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
একইসাথে ৩২৯ কোটি টাকার ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্মার্ট সিটি প্রকল্প’ এর আরও অধিকতর ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি’ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছে মন্ত্রণালয়। ফলে প্রকল্পটি আপাতত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে না বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
অবশ্য এর আগে ২০১৭ সালে নগর ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল সংস্থাটি। মন্ত্রণালয় সেটি বাতিল করে দেয়। পরবর্তীতে গত বছরের ৫ আগস্ট নতুন নগর ভবন নির্মাণের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে একটি দাপ্তরিক পত্র দিয়েছিলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। সেটারও কোনো সুরহা মেলেনি।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, আধুনিক নগর ভবন প্রকল্পের ডিপিপিতে বিলাসবহুল গাড়ি ও অন্যান্য যান বাদ দিয়ে ব্যয় সংশোধন
করার নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে, ২টি অফিস বাস ২ কোটি টাকা, ৩টি এরিয়াল লিফট ৬ কোটি টাকা, ৩টি ওয়াটার ভাউজার ৬ কোটি টাকা, ১৪টি ডবল কেবিন পিক আপ ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ৮টি জিপ ৫ কোটি ৬ লাখ টাকা এবং ১টি জিপ (পাজেরো) ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ নিয়ে ২৯ কোটি ৭৫ লাখ ( প্রায় ৩০ কোটি টাকা) টাকা ব্যয় কমবে। এছাড়াও প্রকল্পটিতে নগর ভবনে ‘ডিজিটাল অটোমেটেড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ’ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
প্রকল্পের ডিপিপি থেকে জানা যায়, ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫৪ বর্গফুটের ২৩ তলা সিটি ভবনের ২ বেইজমেন্ট ও ফাউন্ডেশনসহ ২৩ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজে ব্যয় হবে ১১৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে ফার্নিচার সরবরাহসহ ইন্টেরিয়র কাজে ব্যয় ২৫ কোটি, ৬টি লিফট সরবরাহ ও স্থাপনে ৬ কোটি টাকা, ২০০টি এয়ারকুলার সরবরাহ ও স্থাপনে ২ কোটি টাকা, ১টি সাবস্টেশন, জেনারেটর এবং সোলার প্যানেল সরবরাহ ও স্থাপনে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পের ফিজিক্যাল কনটিনজেন্সির জন্য রাখা হয়েছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা। যা প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৮৯৫ শতাংশ এবং প্রাইস কনটিনজেন্সির জন্য রাখা হয়েছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৮ হাজার টাকা। এগুলো প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৮৯৫ শতাংশ।
প্রকল্পের ডিপিপিতে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্দেশ্য হচ্ছে নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত এবং নাগরিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করা। নগরবাসীর আকাক্সক্ষা অনুযায়ী সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা, বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মপ্রবাহ নিশ্চিত করে সময়ের অপচয় রোধ করা এবং নগরবাসীকে ডিজিটাল সেবা প্রদানের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সহায়তা প্রদান করা।