নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসছে সিসি ক্যামেরা

44

নগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাফিক পুলিশ বক্সসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি)। কয়েকদিনের মধ্যে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ হলে কার্যক্রম চালু হবে। এর ফলে দ্রুত অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব বলে জানান সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, আগে বসানো যেসব ক্যামেরা নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো সিএমপি’র নিজস্ব উদ্যোগে সচল করা হবে।
জানা যায়, সিএমপি সদরদপ্তর থেকে স্থাপিত ১০৪টি ক্যামেরার মধ্যে বর্তমানে ৩৪ থেকে ৩৫টি সচল রয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে তৎকালীন কমিশনারের নির্দেশে নগরীতে সিসি ক্যামেরা বসানোর কার্যক্রম শুরু করা হয়। তখন বিভিন্ন পয়েন্টে ১৩৯টি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। এসময় অবৈধ বিলবোর্ড ও ক্যাবল অপসারণসহ যান্ত্রিক ত্রূটির কারণে বেশ কিছু ক্যামেরা অচল হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে আরো ৫০টি সিসি ক্যামেরা বিভিন্ন সময় বসানো হয়। বর্তমানে ট্রাফিক পুলিশ বক্স, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং অলিগলির বিভিন্ন স্পটে এসব ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। একই সাথে সিএমপি’র ঊর্ধ্বতনরা যাতে সিসি ক্যামেরাগুলো সরাসরি সদর দপ্তর থেকে মনিটরিং করতে পারেন সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, নগরীর এ.কে খান মোড়. আকবরশাহ মোড়, বারেক বিল্ডিং মোড়, বহদ্দারহাট, সিটি গেট, সিমেন্ট ক্রসিং, দেওয়ানহাট, ইপিজেড, চকবাজার, কদমতলী মোড়, কোতোয়ালি, মুরাদপুর, নিউ মার্কেট, পটিয়া ক্রসিং, সাগরিকা, ষোলশহর ২নং গেট এবং টাইগার পাস ট্রাফিক বক্সে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
এদিকে গত ২৮ ফেব্রূয়ারি শুক্রবার রাতে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেটে ট্রাফিক পুলিশ বক্সে বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। ওই ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বিস্ফোরক আইনে একটি মামলাও দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তভার পড়ে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজমের হাতে। কিন্তু ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনো সিসি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তের শুরুতেই হোঁচট খেতে হয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। সিএমপি’র নথিতে চারটি সিসি ক্যামেরা আছে বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ওইসব ক্যামেরার একটিও সচল পাওয়া যায়নি। এতে অপরাধীদের শনাক্ত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ওই ঘটনার পর গত ১ মার্চ সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান এক বৈঠকে অচল সিসি ক্যামেরাগুলো দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেন।
সিএমপি’র ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খান বলেন, চাহিদাপত্রের আলোকে ট্রাফিক বিভাগের আওতাধীন বক্সে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের উত্তর জোনে ১৭টি বক্সের মধ্যে ১৪টি বক্স ট্রাফিক পুলিশ সরাসরি ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, নগরীর প্রবেশদ্বারগুলোকে নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে, সেক্ষেত্রেও সিসি ক্যামেরার ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে আগ্রাবাদ বাদামতলী, জিইসিসহ কয়েকটি মোড়ে আমরা আগে থেকে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি।
পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সিটি কর্পোরেশনের। কিন্তু অপরাধ দমন, সুষ্ঠু ট্রাফিকিং ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য দ্রুত এসব ক্যামেরা বসানো জরুরি বলে মনে করছি। তাই আমাদের (সিএমপির) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দ্রুত ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছি। এর আগে যেসব ক্যামেরা অকেজো ছিল সেসবও পুনরায় সচল করে নগরীর প্রত্যেক স্পট আমাদের নজরে নিয়ে আসবো।