নগরীতে পশুরহাট কমছে বসবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই

48

করোনা মহামারীর মধ্যেই দেশের অন্যান্য স্থানের মতো নগরেও বসছে কোরবানির পশুর হাট। তবে এবার কমানো হচ্ছে হাটের সংখ্যা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আপত্তির কারণে ৩টি কমিয়ে ৭টিতে আনা হয়েছে। যার মধ্যে তিনটি স্থায়ী ও চারটি হাট অস্থায়ীভাবে কোরবানি ঈদের আগের ১০দিন বসবে। এবারের বাজারগুলোকে দুই শিফটে বসানোর কথা ভাবছে সিটি করপোরেশন।
বাজারে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা নিশ্চিত করেছেন চসিকের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা। তিনি জানান, করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে মানুষকে বাসা থেকে বের হতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কোরবানির পশুর হাটে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত মানুষ আসার কোনো দরকার নাই। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি কেউ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে চসিক পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবস্থা নেবে।
রাজস্ব বিভাগ সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি হাট ব্যবস্থাপনায় জোর দেওয়া হবে। বাজারগুলোতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোরবানির বাকি রয়েছে আরও প্রায় ২৪দিন। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে হাটে পশু বেচাকেনা। আজ (৮ জুলাই) হাট ইজারা সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করেছে চসিক। গত ২৯ জুন দরপত্র আহব্বান করে চসিক রাজস্ব বিভাগ।
চসিক সূত্র জানায়, গত বছর নগরীতে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে কোরবানির পশুর হাটের সংখ্যা ছিল ১০টি। এবার সিএমপির আপত্তির মুখে ও করোনা ভাইরাসে ঝুঁকি এড়াতে তিনটি হাট বাদ দেওয়া হচ্ছে। সেগুলো হলো-স্টিল মিল, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ (কাটগড়) এবং নিউমুরিং আবাসিক এলাকার পাশে (বড়পোল) বন্দর কর্তৃপক্ষের খালি জায়গা। তিনটি স্থায়ী পশুর হাট সাগরিকা গরুর বাজার, পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার ও বিবিরহাট থাকছে আগের মতোই। এর বাইরে বসানো হবে ৪টি অস্থায়ী হাট। এগুলো হলো-কর্ণফুলী পশুরহাট, কমল মহাজন হাট গরু বাজার, সল্টগোলা গরুর বাজার, পতেঙ্গা বাটার ফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রূপের খালি মাঠ।
অন্যদিকে কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পশু কেনা-বেচা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জেল জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। নগরে সিটি করপোরেশনের তত্ত¡াবধানে বসা পশুর হাটগুলোতে সিটি করপোরেশন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং বাকিগুলোতে সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালন করতে জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন জানান, পশুরহাটে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সিটি করপোরেশন ইজারা দেওয়া বাজারগুলোতে সংস্থাটির অধীনে মোবাইল কোর্ট চালানো হবে এবং বাকিগুলোতে জেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। তবে এখনও আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা পাইনি।
কোরবানি পশুর হাট সম্পর্কে সিটি মেয়র বলেন, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির পশু কিনতে হবে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কে মাস্ক পড়তে হবে। এছাড়া দুইজনের বেশি বাজারে আসা যাবে না। পরিবারের বয়স্ক এবং ছোটদের নিয়ে বাজারে কোনভাবে প্রবেশ করা যাবে না। হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য আলাদা আলাদা পথ থাকবে। স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেয়া হবে। মোবাইল কোর্ট ছাড়াও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক থাকবে।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হাটগুলো দুই শিফটে পরিচালনার পরিকল্পনা আছে। এক্ষেত্রে কোন বাজারে সকাল ৯টা/১০টা থেকে বিকেল ৩টা/৪টা পর্যন্ত এক শিফট এবং বিকেল ৩টা/৪টা থেকে রাত ১০টা বা ১১টা পর্যন্ত আরেক শিফট। আবার বাজারগুলোকে ঘিরে ওয়ার্ডভিত্তিক নির্দিষ্ট করে দেবো। যাতে নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের মানুষ নির্দিষ্ট বাজারেই যেতে পারেন।