নগরীতে জীবাণুনাশক ছিটালেন মেয়র

104

করোনা ভাইরাস থেকে নগরবাসীকে মুক্ত রাখতে প্রধান সড়ক ও বাড়ির আশপাশে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। নগরীর দামপাড়া থেকে মুরাদপুর মোড় পর্যন্ত নিজের হাতে ব্লিচিং পাউডারের মিশ্রণ ছিটানো উদ্বোধন করে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এছাড়াও আগের দিন থেকে ৪১ ওয়ার্ডজুড়ে তিন হাজার পরিচ্ছন্ন কর্মী বাসা-বাড়ির আশপাশে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে আসছেন এবং এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন মেয়র নিজেই।
গতকাল বুধবার ১৬ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৩টি পানির ভাউজারের মাধ্যমে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে জীবাণুনাশক ছিটিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এই কার্যক্রম শুরু করে দামপাড়াস্থ ওয়াসার মোড় থেকে। এরপর দামপাড়া থেকে মুরাদপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় ৩ কি. মি. পায়ে হেঁটে জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি রাস্তায় ছিটান মেয়র নাছির। ভাউজার তিনটির একটি দামপাড়া থেকে কালুরঘাট, অপরটি দামপাড়া থেকে পতেঙ্গা, আরেকটি দামপাড়া হয়ে চট্টেশ্বরী, চকবাজার, সিরাজদৌল্লা, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালী, নিউ মার্কেট, জুবলী রোড হয়ে পুনরায় দামপাড়ায় ফিরে আসছে। প্রতিদিন এ পরিক্রমায় জীবাণুনাশক পানি রাস্তায় ছিটানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে।
এই কার্যক্রম উদ্বোধনকালে সিটি মেয়র বলেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। সচেতনতাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রত্যেকেই সতর্কতার অংশ হিসেবে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, গণপরিবহন ও ময়লা পোশাক এড়িয়ে চলা, ফলের রসসহ পর্যাপ্ত পানি পান করা, ঘরে ফিরে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত ধোয়া, ডিম কিংবা মাংস রান্নার সময় ভালো করে সিদ্ধ করা, নিয়মিত থাকার ঘর এবং কাজের জায়গাসহ ঘরের আঙিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে চসিকের উদ্যোগে সড়কে জীবাণুনাশক ওষুধ মেশানো পানি ছিটানো হচ্ছে বলে সিটি মেয়র উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চসিক বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। চসিক একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবো শতভাগ আন্তরিকতার সাথে এবং নাগরিক দায়বদ্ধতা থেকে এ কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। প্রতিটি ওয়ার্ডে যেখানে লোক সমাগম হয় সেখানেও জীবাণুনাশক পানি ছিটানো হবে। শুরুতে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে এবং পরবর্তীতে অলিগলিতে জীবাণুনাশক পানি ছিটানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এইদিকে চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বলেন, শুধু ভাউজারের মাধ্যমে নয়, হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডজুড়ে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। প্রতি ওয়ার্ডে ১ কেজি বিøচিং পাউডার বরাদ্দ রয়েছে। ১০ গ্রাম দিয়ে ১০ লিটার জীবাণুনাশক বানানো যায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য রয়েছে, প্রতিটি বাসা-বাড়ির আশপাশে জীবাণুনাশক ছিটানো।
এছাড়া মঙ্গলবার নগরীর আদালত ভবন, বিভিন্ন হাটবাজার, রাস্তার মোড়গুলোতে হ্যান্ড মেশিন দিয়ে স্প্রে করা হয়। নগরীর বিভিন্ন স্থানে কর্পোরেশনের অনেক হাটবাজার ও মার্কেট রয়েছে। এই বাজারগুলো আগত ক্রেতা-বিক্রেতা সর্বসাধারণকে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার নিমিত্তে চসিকের উদ্যোগে হাত ধোয়া কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যেকোন তথ্য জানার জন্য চসিক কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ করতে পারে নগরবাসী। এলাকায় কেউ হোম কোয়ারেন্টাইন না মানলে সে তথ্যও জানাতে পারবে নাগরিকবৃন্দ। কন্ট্রোল রুমের নাম্বার হচ্ছে ০৩১-৬৩০৭৩৯ ও ০৩১-৬৩৩৬৪৯। উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান ছিদ্দিকী যিশু ও তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক।