ধর্ষণের শিকার তরুণীর মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে ভারত

31

উচ্চ-বর্ণের চারজনের ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক দলিত তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ভারত। দুই সপ্তাহ আগে সংকটজনক অবস্থায় দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের ওই তরুণী। ২ সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে তার মৃত্যু হয় মঙ্গলবার সকালে। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে নিজ গ্রামেই গত ১৪ সেপ্টেম্বরে একটি মাঠে ঘাস কাটতে গিয়ে ধর্ষিত হয়েছিলেন ১৯ বছরের এই তরুণী। তাকে মারাত্মকভাবে জখমও করা হয়। তার দেহের একাধিক হাড় ভাঙা ছিল, জিহ্বাও কেটে ফেলা হয়েছিল। অভিযুক্ত চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিবিসি জানায়, তরুণীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারতজুড়ে ন্যায় বিচারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সঞ্চার হয়েছে ক্ষোভ। হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ করেছে বহু মানুষ।
নিগৃহীতার ভাই বিবিসি হিন্দিতে অভিযোগ করে বলেছেন, ঘটনার পর প্রথম ১০ দিনে পুলিশ কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি। তার বোনকে মৃত্যুমুখে ফেলে রাখা হয়েছিল। সে ১৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছে। নিহত তরুণীর পরিবারের সদস্যরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকাকে জানান, এই অপরাধের হোতারা সবসময়ই ওই এলাকার দলিত নারীদের হয়রানি করত। উত্তর প্রদেশের বিরোধী দলগুলো দলিত নারীর ওপর এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে।
উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেছেন, নারীর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের প্রতি রাজ্য সরকার সংবেদনশীল নয়। আক্রান্ত নারীকে হাসপাতালে দেখতে যান দলিত রাজনীতিবিদ ও অ্যাকটিভিস্ট চন্দ্রশেখর আজাদ। আর ওই নারীর মৃত্যুর পর ভারত জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে তার দল ভিম আর্মি।
ভারতের সবচেয়ে নিপীড়িত নাগরিক দলিত স¤প্রদায়ের মানুষেরা। হিন্দু ধর্মের বর্ণপ্রথা অনুযায়ী সবচেয়ে নিচু বর্ণের আওতায় পড়া এসব মানুষদের সুরক্ষায় ভারতে আইন রয়েছে। তারপরও বৈষম্যের শিকার হওয়ার তাদের নিত্য বাস্তবতা। যদিও ভারত জুড়ে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। টুইটারে শীর্ষ আলোচনার ট্রেন্ডে উঠে এসেছে ভারতে দলিত নারীর মৃত্যুর ঘটনা। অনেকেই তাকে ভুলে যাওয়া নির্ভয়া আখ্যা দিচ্ছেন। ২০১২ সালে দিল্লির বাসে এক মেডিক্যাল শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর রাস্তায় ফেলে দেওয়া হলে হতবাক হয়ে পড়ে গোটা দুনিয়া। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া নারীকে নির্ভয়া নাম দেয় ভারতের সংবাদমাধ্যম।