‘দ্রুতগতিতে’ সাইবেরিয়ার দিকে সরছে উত্তর চৌম্বক মেরু

52

পৃথিবীর উত্তর চৌম্বক মেরু সা¤প্রতিক দশকগুলোতে খুব দ্রুত সরেছে। এ সরে যাওয়ার হার এতো বেশি যে নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই নতুন করে এর অবস্থান নির্ণয়ে বাধ্য হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সোমবার তারা জানিয়েছেন, বছরে প্রায় ৩৪ মাইল গতিতে সরছে উত্তর চৌম্বক মেরু। ২০১৭ সালে এটি আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অতিক্রম করেছে। ক্রমাগত সাইবেরিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে এটি। বিজ্ঞানীরা বলে আসছেন, পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হচ্ছে এবং ক্রমাগত তা উল্টে যাবে। এর মানে, উত্তর মেরু দক্ষিণের জায়গায় ও দক্ষিণ মেরু উত্তরের জায়গায় চলে যাবে। পৃথিবীর ইতিহাসে অসংখ্যবার এ ঘটনা ঘটেছে। তবে চৌম্বক মেরু রাতারাতি বদলে যায় না। চৌম্বক মেরুর বদল হতে ১ হাজার বছর কিংবা তারও বেশি সময় লেগে যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ চৌম্বক মেরুর সরে আসার গতি উত্তরের চেয়ে অনেক কম।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও যুক্তরাজ্য প্রতি পাঁচ বছর পর পর উত্তর চৌম্বক মেরুর অবস্থান নির্ণয় করে থাকে। তবে এবার চার বছরের মাথায় উত্তর চৌম্বক মেরুর অবস্থান নির্ণয় করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। এর কারণ, উত্তর চৌম্বক মেরু সরে আসার দ্রুতগতি। সোমবার বিজ্ঞানীদের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ১৮৩১ সালে কানাডিয়ান আর্কটিক অঞ্চলে অবস্থান ছিল উত্তর চৌম্বক মেরুর। এরপর থেকে প্রায় ১৪শ মাইল (২৩০০ কিলোমিটার) সরে সাইবেরিয়ার দিকে যাচ্ছে এটি। উত্তর চৌম্বক মেরুর সরে যাওয়ার গতি বছরে প্রায় ৯ মাইল (১৫ কিলোমিটার) থেকে বেড়ে ৩৪ মাইলে (৫৫ কিলোমিটার) দাঁড়িয়েছে।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-পদার্থ বিজ্ঞানী ও গবেষক আরনাউড চুলিয়াট জানিয়েছেন, উত্তর চৌম্বক মেরুর দ্রুতগতির কারণে স্মার্টফোন ও কিছু ইলেক্ট্রনিকসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা কম্পাস দিয়ে দিকনির্ণয় করতে সমস্যা হবে। বিমান ও জাহাজগুলোও ব্যাকআপ নেভিগেশন হিসেবে সাধারণত উত্তর চৌম্বক মেরুর ওপর নির্ভরশীল। তবে স্যাটেলাইটভিত্তিক হওয়ায় জিপিএসের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী নেভিগেশন ও প্যারাসুট নিয়ে নামার ক্ষেত্রে উত্তর চৌম্বক মেরুর ওপর নির্ভর করে।