দ্বিগুণ হচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির সক্ষমতা

274

চট্টগ্রামের গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার ৭টি ডিআরএস (ডিস্ট্রিক্ট রেগুলেটিং স্টেশন) এর সক্ষমতা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার পদক্ষেপ নিয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। কর্ণফুলী গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন প্রকল্পের আওতায় নগরীর এসব ডিআরএসগুলোকে আরো বেশি সক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এতে নগরীর শিল্প কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ ও সরবরাহ বাড়বে।
তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ৬ লাখ দুই হাজার ৮৩ জন গ্রাহক রয়েছে কেজিডিসিএল’র। তন্মধ্যে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮৩ জন আবাসিক গ্রাহক ও শিল্প গ্রাহক রয়েছে ১ হাজার ৫৫ জন। সারাদেশে বর্তমানে ৪৫০-৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে পেট্রোবাংলা কেজিডিসিএলকে দৈনিক ৩০০-৩৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামে ৫শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। তবে বর্তমান ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবস্থায় ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম।
কেজিডিসিএল সূত্রে জানা গেছে, শিল্প গ্রাহকদের পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে বর্তমান নেটওয়ার্কের সক্ষমতা ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করার জন্য কর্ণফুলী গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে চলমান ৩৯৮ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৭টি ডিআরএস এর সক্ষমতা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি একই প্রকল্পের আওতায় শহর এলাকায় আরো ১৫০ পিএসআই চাপের ১০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৬ কিলোমিটার ডিস্ট্রিবিউশন পাইপলাইন স্থাপন করা হচ্ছে। তন্মধ্যে নাছিরাবাদে চট্টগ্রাম সেনানিবাস সংলগ্ন ডিআরএস থেকে ২নং গেইট পর্যন্ত পাইপলাইনের কাজ শেষ হয়েছে। কালুরঘাট ডিআরএস থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণের কাজ চলছে। তাছাড়া একই প্রকল্পের আওতায় ৩৫০ পিএসআই চাপের ২৪ ইঞ্চি ব্যাসের আড়াই কিলোমিটার সঞ্চালন পাইপলাইনও নির্মাণ করা হবে।
এই প্রকল্পে ৭টি ডিআরএস এর সক্ষমতা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। নাছিরাবাদ, কালুরঘাট, ইপিজেড, পতেঙ্গা, আন্দরকিল্লা, বাকলিয়া ও টাইগারপাসস্থ এসব ডিআরএস এর বর্তমান সক্ষমতা ১৫-২৫ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে ৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে আপগ্রেডেশন (উন্নীত) করা হচ্ছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রান্সমিশন (সঞ্চালন) লাইন থেকে আসা গ্যাস হাই প্রেসার (উচ্চ চাপ) থেকে ইন্টারমিডিয়েট প্রেসারে (মধ্যম চাপে) পরিবর্তন করা হয়। নির্মিত ডিআরএসগুলোতে সঞ্চালন লাইন থেকে নেয়া গ্যাসের চাপ ৯৬০ পিএসআই (হাই প্রেসার) থেকে ৩৬০ পিএসআই (ইন্টারমিডিয়েট প্রেসার)তে নামিয়ে সরবরাহ লাইনে প্রেরণ করা হয়।
কর্ণফুলী গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী আ ন ম সালেহ পূর্বদেশকে বলেন, ‘মিরসরাই অর্থনৈতিক জোনে গ্যাস সরবরাহ ও চট্টগ্রামের গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশনসহ ৩৯৮ কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তন্মধ্যে ৭টি ডিআরএস এর আপগ্রেডেশন অন্যতম। এসব ডিআরএস এর সক্ষমতা ১৫-২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে থাকলেও বর্তমানে ৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে রূপান্তর করা হবে। এতে শিল্প গ্রাহকদের গ্যাসের চাপ বাড়বে, সরবরাহও বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের শিল্প মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এলএনজি সরবরাহ করা। ইতোমধ্যে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। এলএনজি’র সুফল গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই মূলত নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। আশা করছি আগামি জুনের মধ্যে আমরা প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো।’