দ্বন্দ্ব-সংঘাত মুক্ত হোক সিটি নির্বাচন

62

সনেট দেব

ব্যানার ও পোস্টারের ছেয়ে গেছে পুরা নগরী। থেমে থেমে মিছিল। কোথাও প্রার্থীদের তৈরি করা নির্বাচনী প্রচারণামূলক গান। এক অন্যরকম আনন্দমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে শহরজুড়ে। কিন্তু আনন্দের মাঝেও ভোটার ও জনগণের মনে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক উত্তেজনার কারণে সৃষ্টি সৃষ্টি হচ্ছে দ্ব›দ্ব-সংঘাত। ভোটাররাও হয়ে উঠছে আতঙ্কিত ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে মাঝপথে স্থগিত হয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের নতুন দিনক্ষণ ঘোষণার পর সাধারণ ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রমুখী করাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। কিন্তু ভোটের মাঠে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর দৃশ্যপটও দ্রæত বদলে যাচ্ছে। প্রচারণা শুরুর পরদিন থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে। ভোটগ্রহণের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচনী সহিংসতাও রক্তক্ষয়ী রূপ নিচ্ছে। এতে করে এবারের সিটি নির্বাচনে বাকি সবকিছুকে ছাপিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বা নিরাপত্তা পরিস্থিতিই চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা কতটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা নিয়ে নগরীর সাধারণ মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীদের (আ.লীগের দলীয় প্রার্থী এবং বিদ্রোহী প্রার্থী) মধ্যে দ্ব›দ্ব-উত্তেজনা বিরাজ করছে। বেশিরভাগ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র দ্ব›দ্ব রয়েছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে দ্ব›দ্ব-সংঘাতে বাড়ছে উত্তেজনা। বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। তাই নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কিত সাধারণ মানুষ। নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৫ টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ ভোটাররা চান একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা রোধে কঠোর হচ্ছে মহানগর পুলিশ। নগরীর আগ্রাবাদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহতের দুই দিনের মাথায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সিএমপির পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং নগরজুড়ে বিশেষ টহল শুরু করা হয়েছে। উল্লেখ্য আগামী ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনে ৭ জন মেয়র প্রার্থী, ৫৭ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১৭২জন সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ মোট ২৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ৪১টি ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। চসিক নির্বাচনে এবার মোট ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন।
লেখক: সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক