দোয়া কবুলের মাস রমজান

1490

মহান দয়ালু আল্লাহর প্রেমে বিভোর হয়ে মু’মিন বান্দারা দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনায় নিয়োজিত থাকেন। দিনভর
রোজা আদায় শেষে বান্দারা তারাবির নামাজের সময় প্রতি চার রাকাত অন্তর মহান দয়ালু প্রভুর দরবারে দু’হাত তুলে ফরিয়াদ করেন ‘আল্লাহুম্মা ইন্না নাস আলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান নার, ইয়া খালিকাল জান্নাতা ওয়ান্ নার, বিরাহমাতিকা ইয়া আজিজু ইয়া গফ্ফার, ইয়া করিমু, ইয়া সাত্তার, ইয়া রহিমু ইয়া জাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার। আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান্নার, ইয়া মুজিরু ইয়া মুজিরু ইয়া মুজির, বি রাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহেমীন। অর্থাৎ ওহে দয়াময় আল্লাহ আমরা তোমার দরবারে জান্নাত লাভের ফরিয়াদ করছি, এবং দোজখ হতে পরিত্রাণের জন্য তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি, ওহে জান্নাত ও দোজখের সৃষ্টিকর্তা তোমার রহমতের উসিলা নিচ্ছি, হে মহা ক্ষমাশীল, হে দয়ালু, হে দোষ গোপনকারী হে দয়াবান, হে পরাক্রমশালী, হে মহান স্রষ্টা, হে উপকার দাতা, হে আল্লাহ! আমাদেরকে দোযখ থেকে মুক্তি দাও। তোমারই দয়ার উসিলায় হে সর্বাধিক দয়ালু।
সকল মু’মিন মুসলমান সমস্বরে কায়মনোবাক্যে দয়াময় প্রভুর দরবারে প্রতি রাতে এভাবে আকুল ফরিয়াদ জানান। হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রমজানুল মোবারকে আল্লাহ্ পাককে স্মরণকারী ব্যক্তিকে মাফ করা হয়। আর আল্লাহ্ পাকের দরবারে প্রার্থনাকারী ব্যক্তি বঞ্চিত হয় না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে যে, রমজানের প্রত্যেক রাতে একজন ফেরেশতা এই ঘোষণা করে, হে কল্যাণকামী! এদিকে মন দাও, কল্যাণের পথে অগ্রসর হও! হে অন্যায়কারী এবার বিরত হও! চক্ষু খোল। অতঃপর এই ফেরেশ্তা আল্লাহর পক্ষ থেকে বলে, আছে কি কোন ক্ষমাপ্রার্থী যাকে আমি ক্ষমা করব, আছে কি কোন তওবাকারি, যার তওবা কবুল করব, আছে কি কোন প্রার্থনাকারি, যার প্রার্থনা মঞ্জুর করা হবে, অর্থাৎ রোজাদারের যে কোন নেক দোয়া আল্লাহ্ পাক কবুল করেন, যে সিয়াম সাধনায় রত, যে আল্লাহ্ পাকের প্রেমে মুগ্ধ হয়ে রোজা পালন করছে তার সমস্ত দোয়া আল্লাহ্ পাকের দরবারে কবুল হয়। তার যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ হয়। অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছেÑ‘আল্লাহ পাক তার আরশ বহনকারি ফেরেশতাদের নির্দেশ দান করেন তোমাদের নিজস্ব ইবাদত মূলতবি রাখ এবং রোজাদারদের দোয়ার সময় আমিন বলতে থাক।
অতএব, উপরোক্ত হাদিস শরীফসমূহের মর্মার্থের আলোকে দিবালোকের মত স্পষ্ট রোজাদারের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হয়। অতএব আমাদের উচিৎ দুনিয়া আখিরাত উভয় জগতের কল্যাণের জন্য প্রার্থনারত থাকা। বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য সকল প্রকার বালা মুসিবত থেকে দেশের সকল জনগণকে হেফাজত, সর্বোপরি দেশের কল্যাণ ও শান্তির জন্য সকলের সমস্বরে দোয়া করলে নিশ্চয় রাহমানুর রহিম দয়ালু আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করবেন। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দিন। আমিন!
লেখক : সহ সম্পাদক, মাসিক তরজুমান