দেশে নতুন রোগী নেই আক্রান্ত দু’জনের অবস্থা উন্নতির দিকে

31

বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কারও মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েনি বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর।
গতকাল সোমবার আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনজন আক্রান্ত হওয়ার খবর জানানোর পর ২৪ ঘণ্টায় ৫০৯টি ফোন কল এসেছে আইইডিসিআরের হটলাইনে। তার মধ্যে ৪৮৯টি কলই ছিল নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে।
“এ সময় ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। তার মানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখনও তিনজন।” খবর বিডিনিউজের
আইইডিসিআর রবিবার এক ব্রিফিংয়ে দেশে প্রথমবারের মত তিনজনের নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশ করে। ওই তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ সম্প্রতি ইতালির দুটি শহর থেকে দেশে ফেরেন। তাদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে এসে পরিবারের আরেক নারী সদস্য আক্রান্ত হন।
যেসব দেশে নভেল করোনাভাইসের প্রকোপ বেশি, সেখান থেকে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি ফিরে এলে তাদের ১৪ দিন বাড়িতে অবস্থান করার পরামর্শ দেন অধ্যাপক ফ্লোরা।
এ বিষয়ে স্বজনদের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, “এই চৌদ্দ দিন বাড়িতে অবস্থানের ক্ষেত্রে স্বজনদেরও সচেতন থাকতে হবে। তিনি যদি ভুল করে বাড়ি থেকে বের হয়েও যান, তাকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে তিনি কোয়ারেন্টিনে আছেন।”
বিদেশ ফেরতদের সঙ্গে অনেক সময় যে বিরূপ আচরণ করা হচ্ছে, সে বিষয়টি তুলে ধরে ডা. ফ্লোরা বলেন, এর ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
“আমরা খবর পাচ্ছি শঙ্কিত হয়ে প্রতিবেশী এবং বাড়িওয়ালারা তাদের (বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের) সঙ্গে বিরূপ আচরণ করছেন। আমরা যদি তাদের সহযোগিতা না করি তাহলে তাদের বাসা থেকে গিয়ে হোটেলে বা বাইরে থাকতে হবে। আর তারা যদি সংক্রমিত হয় তাহলে এটি আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। সেজন্য তারা যেন বাড়িতে থাকেন সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা করতে হবে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বর্ধন জং রানা উপস্থিত ছিলেন এ সংবাদ সম্মেলনে।
করোনাভাইরাস সবখানে ছড়িয়ে গেছে, এ কারণে বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ায় অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেন ডা. রানা। তিনি বলেন, “এখন সবাইকে নিয়ে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। কতটা আগে রোগটি শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটি হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশকে এখন এই চ্যালেঞ্জটি নিতে হবে।
“এটা শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একার কাজ নয়। মন্ত্রণালয়, সব বিভাগ, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি পর্যায়েও এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি নিয়ে গুজব, ভীতি যাতে না ছড়ায় সে বিষয়ে গণমাধ্যমকেও ভূমিকা রাখতে হবে।”

আক্রান্ত দু’জনের অবস্থা উন্নতির দিকে : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো যে তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে দু’জন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। ঢাকার রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) তারা চিকিৎসাধীন। তবে দু’জনেরই শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ। গতকাল সোমবার একথা জানান তিনি। খবর বাংলানিউজের
গত রবিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে মোট তিনজনকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। একজনের রিপোর্ট ভালো পাওয়ায় তাকে রাতেই ফেরত পাঠানো হয়। আক্রান্ত অপরজন কোন এলাকার এখনও সেটা জানা যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনজনকে রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রবিবার তারা সেখানে ভর্তি হন। পরীক্ষা শেষে একজনের শরীরে কোনো ধরনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ফলে তাকে রাতেই নারায়ণগঞ্জ নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়া সেখানে ভর্তি অপর দু’জনের অবস্থাও উন্নতির দিকে। তাদের আইইডিসিআরে রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জবাসীকে কোনো ধরনের আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, তিনজন আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে দেশে। এদের দু’জন নারায়ণগঞ্জের হলেও স্বাভাবিক জীবনযাপনে নগরবাসীর কোনো ধরনের সমস্যা নেই।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের দুজন কয়েকদিন আগে ইতালি থেকে দেশে আসেন। পরবর্তীকালে জ্বর অনুভব করলে তারা একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করান। সেখান থেকে চিকিৎসকরা রাজধানীতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ বিষয়ে অবহিত করেন। পরে দফায় দফায় তাদের দু’জনসহ স্বজনদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আমরা মিডিয়ার মধ্য দিয়ে আরো মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারবো। এছাড়া এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও কমবে। আমাদের মূল আয়োজন পরে পুনর্র্বিন্যাস করে বাস্তবায়ন করা হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই বিস্তারিত বলা যাবে। বঙ্গবন্ধু সব সময় জনগণের জন্য ভাবতেন, সেদিক থেকে এই বর্ষ উদযাপনেও জনগণকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা।
এছাড়া ১৭ মার্চ সকালে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের পুষ্পস্তবক অর্পণ আয়োজনও করা হবে স্বল্প আঙ্গিকে। তবে বছরব্যাপী অন্য আয়োজন জনসমাগম এড়িয়ে চলতে থাকবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারে সংস্কৃতিজন আসাদুজ্জামান নূরকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সংযুক্ত রয়েছে।
মুজিববর্ষে আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের ব্যাপারে তিনি বলেন, আপাতত এ বিষয়ে তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে ব্রিফ করবেন।
কমিটির সভায় সরকারে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মন্ত্রণায়রের মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।