দেশের অর্থনীতি সিঙ্গাপুরের চেয়েও শক্তিশালী

63

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুরের চেয়েও শক্তিশালী। ব্যাংকে টাকার কোনো সমস্যা নেই। টাকা আছে বলেই সেবা খাত, সামাজিক নিরাপত্তা, অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়নের কাজ চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও চলতি সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। চীন থেকে যেসব কাঁচামাল আসত, এখন তার বিকল্প বাজার খোঁজা হচ্ছে।গতকাল একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশন শেষ হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব ক্ষোভ-ব্যথা বুকে নিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করছি। কারও প্রতি বিদ্বেষ নিয়ে চলি না। প্রতিশোধ নিতেও যাইনি। তবে যেখানে অন্যায় হয়েছে সেখানে ন্যায় করার চেষ্টা করেছি। এজন্য পঁচাত্তরের খুনিদের বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সক্ষম হয়েছি। সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি এবং যাবো। দেশটা যাতে সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে সেজন্য সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
ভাষণের একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা তার পিতা হত্যার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এই সময়ের মধ্যে দেশ গড়ে তুলতে পৃথিবীর অন্য দেশের কোনও নেতা পেরেছেন কিনা জানি না, কিন্তু তিনি করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদায় রেখে গিয়েছিলেন। যখনই বাংলাদেশের মানুষ একটু সুখের মুখ দেখতে শুরু করলো, তখনই পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছে তাদের নেতাকে আর আমরা দুটি বোন হারিয়েছি… ১৫ আগস্ট আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, স্বজনহারা বেদনা নিয়ে বসে আছি। এই সংসদে এখন অনেকেই রয়েছেন।
এ সময় আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতির পিতাকে শুধু হত্যা করা হয়নি, খুনিদের বিচার করতেও দেওয়া হয়নি। বিচারের হাত থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এরশাদ-খালেদা জিয়া সবাইকে উৎসাহিত করেছিল, আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল। কী যন্ত্রণা নিয়ে আছি তা আমি বুঝি! তারপরও সব কষ্ট সহ্য করে একটা জিনিসই শুধু চিন্তা করেছি, আমার বাবা দেশটা স্বাধীন করেছেন দেশের মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের জীবনটা যেন সুন্দর হয়। সেজন্য নিজের ক্ষোভ-ব্যথা সবকিছু বুকে চেপে রেখে আমি দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। এজন্যই করে যাচ্ছি যে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী এই দেশের মানুষ যেন বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার নাম একসময় বাংলার ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। তিনি তার জীবনের সবকিছু ত্যাগ করে গেছেন বাংলাদেশের জনগণের জন্য। নিজের আরাম-আয়েশ, সুখ সবকিছুই তিনি ত্যাগ করেছেন। শুধু বাংলাদেশের মানুষকে একটা সুন্দর জীবন দিতে চেয়েছিলেন। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন তিনি।