দেশবাসীর সমৃদ্ধি কামনা

46

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নগরীতে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। গত ৫ জুন সকালে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়েই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করেছে মুসল্লিরা। ভেদাভেদ ভুলে জামাতের কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। ঈদের জামাত নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে করতে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বরাবরের মত এবারও নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদেই নগরীর প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল আটটায় জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মো. আলাউদ্দীন আল কাদেরী। মোনাজাতে তিনি দেশবাসীর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
ঈদের প্রথম জামাতে সামনের কাতারে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দীন আহমেদ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, সাবেক মেয়র ও জাপা নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
ঈদের নামাজ আদায় শেষে তারা পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করেন এবং একে অন্যকে ঈদ মোবারক জানান। একই স্থানে ঈদের দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল নয়টায়। এতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমুদুল হক।
বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটি আগেভাগেই ঈদের নামাজ আদায়ে যাতে মুসল্লিদের বিড়ম্বনায় পড়তে না হয় সেজন্য পুরো জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে বিশালাকার ত্রিপলের শামিয়ানা দিয়ে ঢেকে ফেলে। আগের বছর ভারি বৃষ্টির মধ্যেই ঈদের জামাত সম্পন্ন করতে হয়েছিল মুসল্লিদের। ভারি বৃষ্টির কারণে বিড়ম্বনা আর ভোগান্তিও পোহাতে হয়েছিল।
এদিকে, নগর পুলিশের পক্ষ থেকে জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে প্রবেশের ফটকগুলোতে তিনটি মুভিং ক্যামেরাসহ ২২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। দামপাড়ায় সিএমপির নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এসব ক্যামেরায় ধারণকৃত দৃশ্য মনিটর করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াত, কুইক রেসপন্স টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ অন্যান্য সদস্যদের জামাতের সন্নিহিত এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়। জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানসহ বেশি মুসল্লির সমাগম ঘটে এমন ৩৪টি বড় ঈদ জামাতকে ঘিরেই পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সকাল আটটায় আউটার স্টেডিয়ামে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান ও জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধানে নগরের লালদীঘি ময়দানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল সাড়ে আটটায়। সেখানেও মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এবছর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে এবার ১৬৪টি স্থানে আর কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির তত্ত্বাবধানে নগরের ৯৪টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।