দৃষ্টি এখন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ উত্তর প্রদেশের দিকে

20

লোকসভা নির্বাচনে শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ বাকি থাকতেই শুরু হয়ে গেছে নানা হিসাব-নিকাশ। কে ক্ষমতায় যাবে কিংবা কোন দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে- সবকিছুর বিশ্লেষণে গুরুত্ব পাচ্ছে উত্তর প্রদেশের ভোটের ফলাফল। ভোটার, পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যেহেতু উত্তরাঞ্চলীয় এই বৃহৎ রাজ্যে বিভিন্ন অনগ্রসর জনগোষ্ঠির বসবাস, আর তাদের ভোটই রাজ্যের মোট ভোটের অর্ধেকের বেশি। সেক্ষেত্রে তাদের ভোটই দেখাবে নতুস সরকার গঠনের পথ। এর বাইরেও রয়েছে নানা সমীকরণ। লোকসভার মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৮০টি উত্তর প্রদেশে। গত গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনের আগের ধাপগুলোয় এই প্রদেশের ৬৬ আসনে ভোট শেষ হয়েছে। বাকী ১৪ আসনের ভোট হবে আগামী ১৯ মে শেষ পর্বে।
স্থানীয় দুইজন পর্যবেক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের ৪৭ আসন নির্ধারণ করবে কোন দল লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। এসব আসনে এবার বিরোধী জোট একাট্টা হয়েছে। প্রচারে দাপুটে বিজেপিকে নিয়ে ভোরটারদের মধ্যে গতবারের মতো আগ্রহ দেখছেন না অনেকেই। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌর একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা জাফর জিলানী বলেন, “এই রাজ্যে আপনি ঘুরে দেখুন, দেখবেন এখানে হিন্দু, মুসলিম, যাদব সম্প্রদায় যেমন আছেন তেমনি শহর পেরিয়ে গেলেই দেখবেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অনগ্রসর গোষ্ঠির বসবাস। শুধুমাত্র যাদব, দলিত ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোটই এই প্রদেশের মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি। “খোদ লখনৌ আসনে যিনিই প্রার্থী হন তাকে অবশ্যই মুসলিমদের ভোট পেতে হয়। গতবার দেখা গেছে কট্টর হিন্দু জাতীয়বাদী সমর্থিত বিজেপির রাজনাথ সিংকে মুসলমানদের ভোটই জিতেয়েছে। ভোটের জন্য তাকে মুসলমানদের নির্বাচনী সভায় গিয়ে পাগড়ি মাথায় দিতে হয়েছে, শেরওয়ানি পরতে হয়েছে।”
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএর ফলাফল ছিল চমকপ্রদ। ৮০ আসনের মধ্যে তাদের জোট পেয়েছিল ৭৩টি, যার ৭১টিই বিজেপির। এছঅড়া পাঁচটি আসন সমাজবাদী পার্টি এবং দুইটি কংগ্রেসের। এবার উত্তর প্রদেশে বিজেপিকে ঠেকাতে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) ও অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি) জোট করেছে। যাকে বলা হচ্ছে ‘গাটবন্ধন’।
ভারতের নিম্নবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায় দলিতদের রাজনৈতিক ‘আইকন’ মায়াবতী। তিনি চারবার ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয় এই নেত্রী কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও প্রভাবশালী। একইভাবে কংগ্রেসও এবার আসন বাড়াতে প্রিয়াংকা গান্ধীকে সাধারণ সম্পাদক করে প্রদেশের নির্বাচনী দায়িত্ব দিয়েছে।