দূতাবাসে হামলা : ইরাকে আরও সৈন্য পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

21

ইরাকে মার্কিন দূতাবাসে হামলা-ভাংচুর এবং নিরাপত্তা চৌকিতে আগুন দেয়ার পর দেশটিতে আরও সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা মার্কিন দূতাবাস লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে এবং দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর ইরানঘনিষ্ঠ মিলিশিয়ার নেতৃত্বাধীন এ বিক্ষোভ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে হাজির হয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
দূতাবাসে হামলার পরপরই ট্রাম্প এ ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করে পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। যদিও পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে তেহরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। দূতাবাসের ভেতরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদেই আছেন এবং তাদের সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২০১২ সালে লিবিয়ার বেনগাজিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং আরও তিন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীদের মোকাবেলায় দূতাবাসের নিরাপত্তা রক্ষীরা স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছিল; নিরাপত্তা চৌকিতে আগুন ধরিয়ে দিলেও বিক্ষোভকারীরা মূল কম্পাউন্ডের ভেতর ঢুকতে পারেনি বলে নিশ্চিত করেছে ওয়াশিংটন।
নিরাপত্তার জন্য পাঠানো অতিরিক্ত সেনারা কয়েকদিনের মধ্যেই দেশটিতে পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। “মার্কিন স্থাপনা ও কর্মকর্তাদের ওপর হুমকির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে যথোপযুক্তভাবেই এই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে,” বিবৃতিতে বলেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এসপার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে কুয়েত থেকে সাড়ে সাতশ সেনা ইরাকে পাঠানো হবে। সামনের দিনগুলোতে ওই অঞ্চলে চার হাজারের মতো সৈন্য পাঠানোরও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইরাকে এখনি ৫ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা অবস্থান করছে।
বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক স্থাপনায় অভূতপূর্ব এ হামলার ঘটনাকে দেশটিকে ঘিরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রক্সি ওয়ারের’ নজির হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কিরকুকে রকেট হামলায় মার্কিন এক বেসামরিক ঠিকাদার নিহতের পাল্টায় ইরানঘনিষ্ঠ কাতাইব হিজবুল্লাহর কয়েকটি ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর ইরাকে ওয়াশিংটন ও তেহরানের প্রভাব বিস্তারের লড়াই নতুন মাত্রা পায়।
মার্কিন বিমান হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় বাগদাদও। এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে বলেও সতর্ক করে দেয় তারা। কিরকুকে রকেট হামলার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগসাজশের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। মার্কিন দূতাবাসে ইরাকি বিক্ষোভকারীদের হামলা-ভাংচুরের ঘটনায়ও তাদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও জানিয়েছে তারা।