দুশ্চিন্তায় পরীক্ষার্থীরা!

50

এই সময়ে প্রায় শেষ হয়ে যেতো উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া শেষে কলেজে ভর্তিচ্ছুদের তোড়জোড়ের কথা ছিল। আগামী নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হতো জেএসসি ও প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা। তাছাড়া আগামী বছরের ফেব্রæয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি এবং আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার কী হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরীক্ষার্থীরা।
করোনাকালে প্রাথমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ছাড়াও প্রভাব পড়েছে উচ্চতর শিক্ষায়ও। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পড়তে যাচ্ছে সেশন জটের কবলে। কিভাবে এর সমাধান হবে? শিক্ষাখাত কিভাবে মোড় ঘুরে দাঁড়াবে, এমন সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে।
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বন্ধ দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনই বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে পরীক্ষার্থীদের মনে দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। তবে সরকার শিক্ষাবোর্ড খুলে দেওয়ার ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এসএসসি’র ফলাফল দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ।
তিনি জানান, এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করা হবে। তবে রমজানে পরীক্ষা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পরবর্তীতে জেএসসি ও স্কুলের পরীক্ষাগুলো কিভাবে নেওয়া হবে, তা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে হবে।
এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, সারাবিশ্বের শিক্ষাখাত এই সমস্যায় ভুগছে। তাই সবার আগে শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে হবে, তারপর বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ।
জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষাবোর্ডগুলো এখনই কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রশ্ন, শিক্ষাবর্ষের ছয় মাস যদি পাঠদান ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাই বন্ধ থাকে তাহলে কীভাবে পাবলিক পরীক্ষা দেবে লাখ লাখ শিক্ষার্থী? যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক এবং মাধ্যমিকের ষাণ¥াসিক পরীক্ষাও নেওয়া যাবে না। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন পড়ালেখা বন্ধ রাখলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া ছাড়া ভিন্ন পথ খোলা থাকবে না। খোলার পর পাঠদান বাড়ানোর জন্য ঐচ্ছিক ছুটি কমানো এবং সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করা হতে পারে।
তবে শিক্ষাবিদদের প্রস্তাব, কোভিড-১৯-এর প্রভাব কমলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহের একদিন একটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের ডাকা যেতে পারে। ঐদিন শুধু ঐ ক্লাসের শিক্ষার্থীরাই স্কুলে আসবে। পুরো সপ্তাহের পড়াটা ঐদিন শিক্ষার্থীদের দিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ১শ নম্বরের জায়গায় সিলেবাস কমিয়ে অর্ধেক নাম্বারের পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মুু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, স্কুলের সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষা কোনোভাবে নিতে পারবে স্কুলগুলো। কিন্তু পড়াশোনা না করতে পারলে, স্কুলে পাঠদান না হলে আগামী জেএসসি, ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হবে। তবে এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করে সিলেবাস কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি জানান, যদি সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় তবে পরবর্তী মাসে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যাবে। এছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশ করা যাবে।