দুইমাস পর দোকান খুললেন ব্যবসায়ীরা

25

নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও টেরিবাজারের দোকানগুলো দুই মাসেরও বেশি বন্ধ থাকার পর গতকাল থেকে চালু হয়েছে। তবে বেচাকেনা কম বলে জানালেন দোকানিরা। সারাবিশ্বের মহামারি করোনা প্রতিরোধে কাপড়ের দোকানগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকান চালু করেছেন বলে জানান তারা।
গতকাল রবিবার সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকে এ দুইটি বড় বাজারের দোকানিরা দোকানপাট খুলতে শুরু করেন। ঝাড়া-মোছা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পণ্যসামগ্রী সাজানো, মেঝে-আসবাব জীবাণুমুক্ত করার কাজেই ব্যস্ত ছিলেন দোকানি ও কর্মচারীরা। দোকান খোলাতে দোকানির পাশাপাশি কর্মচারীরাও খুশি।
তারা বলেন, দীর্ঘ দুইমাস বেচাকেনা বন্ধ ছিল। আজ (রবিবার) থেকে তা চালু হতে যাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা আবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বো। লকডাউনে ঘরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম।
রিয়াজউদ্দিন বাজার আল-মদিনা ক্লথ স্টোরের কর্মচারী সাখাওয়াত হোসেন সুমন বলেন, প্রতিবছর অন্তত ঈদের মৌসুমে আমাদের ভাল ব্যবসা হয়। মালিকও আমাদেরকে বেতনের পাশাপাশি বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা প্রদান করেন। কিন্তু এবারের ঈদটা আমাদের ভিন্ন কেটেছে। আমাদেরকে বেতন প্রদান করা হলেও কোনও বোনাস বা অন্যান্য সুবিধা পাইনি। তবে এখন দোকান খোলাতে আমরা খুশি।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলায়েত হোসেন বলেন, আমাদের ৮২টি মার্কেটে ২ হাজারের বেশি দোকান, শো-রুম রয়েছে। সবাইকে আমরা কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকার-প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছি। যদিও সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখনো পুরোপুরি খুলেনি। কেউ কেউ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে খুলবেন।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের তামাকুমন্ডি লেন বণিক সমিতির সভাপতি শামসুল আলম পূর্বদেশকে জানান, ১১০টি মার্কেটের ১৩ হাজারের বেশি দোকান রয়েছে আমাদের সমিতির অধীনে। এর মধ্যে ৩০০ আমদানিকারকও রয়েছেন। দোকানি-কর্মচারী মিলে ৪০ হাজার মানুষের আনাগোনা। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আমরা ৯টি জীবানুমুক্তকরণ গেইট বসিয়েছি। এছাড়া সব দোকানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জীবাণুমুক্তকরণ স্প্রে, দোকানি-কর্মচারীদের মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস পরার নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, রবিবার সকাল থেকে অনেক দোকান খুলেছে। কিছু কিছু দোকান এখনো বন্ধ রয়েছে। বেচাকেনার চাপ নেই আগের মতো।
উল্লেখ্য, যেই বাজারে খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে পোশাক, ক্রোকারিজসহ জীবনের সব প্রয়োজনীয় পণ্যের বেচাকেনা হয়। যেখানে রয়েছে কয়েক হাজার পাইকারি ও খুচরা দোকান। এ রিয়াজউদ্দিন বাজারের পুরো ব্যবসার সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার ব্যবসায়ীরা। এছাড়া চট্টগ্রামে কাপড়ের পাইকারি বাজার টেরিবাজারসহ বড় বড় বিপনি বিতানগুলোতে একচেটিয়া ব্যবসা সাতকানিয়ার লোকজনের।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে গত ২৫ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ছুটি ঘোষণার পরপরই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ব্যবসায়ীরা গ্রামে ফিরে যায়। এতে বিপত্তি ঘটে। গ্রামে একে অপরের সাথে দেখা করতে ও খোঁজ খবর নিতে বের হয়ে এলাকার মোড়ে মোড়ে আড্ডা দিয়ে সামাজিক সংক্রমণ ঘটে । যার প্রভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়ে অনেক ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মচারী।