দুইদিনে নালা থেকে ৪শ ৩৫ টন মাটি উত্তোলন

65

বর্ষাকে সামনে রেখে নালা-নর্দমা পরিষ্কারের বিশেষ ক্রাশ অভিযান পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গত সোমবার শুরু হওয়া এ অভিযান ৪১টি ওয়ার্ডে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। তবে প্রথম দুই দিনে পাঁচ ওয়ার্ডের নালা থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ৪শ ৩৫ টন মাটি। এ পাঁচটি ওয়ার্ডে আরও দুইদিন নালা পরিষ্কারের কাজ করবে ২শ ৫০ জন শ্রমিক। বৃষ্টির সময় পাহাড়ি ঢলের কারণে এত বেশি মাটি জমেছে বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চসিক সূত্র জানিয়েছে, গত দুইদিনের ড্রেন পরিষ্কারের ক্রাশ অভিযানে দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড ৬৫ টন, আন্দরকিল্লা থেকে ৯৫ টন, জামালখান থেকে ৬৫ টন, উত্তর পতেঙ্গা থেকে ৬৫ টন এবং দক্ষিণ পতেঙ্গা থেকে ১ শ ৪৫ টন মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। চলমান এ ক্রাশ প্রোগ্রামে নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে মেয়র জানিয়েছেন, খাল ও নালা-নর্দমাগুলো যদি অবৈধ দখল থেকে মুক্ত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে জনসচেতনতা গড়ে তোলা যায় তাহলে নগরীর জলাবদ্ধতা বহুলাংশে হ্রাস পাবে। তাই খাল ও নালা-নর্দমাগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও পরিষ্কার রাখতে যাতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা না হয় সে জন্য তিনি সকলকে সজাগ থাকার আহবান জানান। এছাড়াও এ ব্যাপারে তিনি নগরবাসীর সচেতনা প্রত্যাশা করেছেন। ৩ ফুটের কম প্রস্থের নালাগুলো পরিষ্কার করছে সিটি কর্পোরেশন। এর অধিক প্রস্থের নালাগুরো পরিষ্কারের এখতিয়ার সিটি কর্পোরেশনের নেই। এগুলো জলাবদ্ধতার মেগা প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।
এদিকে (সিডিএ) নালা-খাল পরিষ্কারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আশানুরূপ ভূমিকা দৃষ্টিগোচর না হওয়ায়, মেয়র বরাবরই অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন। এমনকি জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজে সিটি কর্পোরেশনের দক্ষতা ও জনবল শেয়ারের আহবান জানিয়েছিলেন তিনি।
চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত দেওয়ান বাজার, জামালখান, আন্দরকিল্লা, উত্তর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে বিশেষ ক্রাশ অভিযান চলবে। এছাড়াও ১৫ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত পশ্চিম ষোলশহর, শুলকবহর, বাগমনিরাম, উত্তর আগ্রাবাদ, দক্ষিণ হালিশহর, ১৯ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত পশ্চিম বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, গোসাইলডাঙ্গা, উত্তর-মধ্যম হালিশহর, দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর, ২৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত চান্দগাঁও, লালখান বাজার, চকবাজার, আলকরণ, উত্তর হালিশহর, ২৭ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত উত্তর কাট্টলী, দক্ষিণ কাট্টলী, পাহাড়তলী, এনায়েত বাজার, বক্সিরহাট, ৩১ মার্চ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত উত্তর পাহাড়তলী, উত্তর পাঠানটুলী, রামপুর, পাথরঘাটা, দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ৪ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচলাইশ, মোহরা, পূর্ব ষোলশহর, সরাইপাড়া, ফিরিঙ্গিবাজার, ৮ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দক্ষিণ পাহাড়তলী, জালালাবাদ, প‚র্ব বাকলিয়া, পাঠানটুলী, পশ্চিম মাদারবাড়ী ও পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে এ অভিযান চলবে।
জানতে চাইলে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী বলেন, বৃষ্টির সময় পাহাড়ি ঢলের কারণে নালায় বেশি মাটি জমে। এছাড়াও নালায় ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে এমনটা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পরিচ্ছন্ন বিভাগের ২৫০ জন কর্মীকে প্রাইমারি (তিন ফুটের কম প্রশস্থ) ড্রেনসমূহ পরিষ্কার করার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ডে ৫০ জন কর্মী টানা ড্রেন পরিষ্কারের কাজ করবে। এভাবে প্রতি চারদিনে পাঁচটি ওয়ার্ডের ড্রেন পরিষ্কারে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোনো ওয়ার্ডে যদি চারদিনের বেশি কাজ করতে হয়, কর্মীরা তাও করবে।