দালালরা সক্রিয় কোটি কোটি টাকা লুটের শঙ্কা

25

উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার পরিবারকে কোরবানির মাংস বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন এনজিও। এসব সংস্থা ইতোমধ্যে তালিকা প্রণয়ণের কাজ প্রায় চ‚ড়ান্ত করেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের মাঝেও বিতরণ করা হবে কোরবানির মাংস।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, তুরস্ক ভিত্তিক এনজিও ডায়নেট ফাউন্ডেশন ৫০ হাজার কেজি মাংস বিতরণ করবে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে। ওই এনজিও’র একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিশ্বের ১৬০টি দেশে তারা কোরবানির মাংস বিতরণ করেন। এতে সর্বোচ্চ বিতরণ হবে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে। আশা করি, ২-১ দিনের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত করে তালিকা প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, এসব মাংস বিতরণে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের নামে একটি মহল কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে প্রতি বছর। এ ব্যাপারে প্রশাসন অবগত থাকলেও কোন ব্যবস্থা নেয় না। এবারও সেই মহলটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এতে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে তারা বসিয়েছে রোহিঙ্গাক্যাম্প সংলগ্ন পশুর হাট। যাতে তাদের সুবিধা হয়, গরু ক্রয়-বিক্রয়ে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে কোরবানির মাংস বিতরণে প্রশাসনিক উদ্যোগের বাইরেও কিছু দালালচক্র বিচ্ছিন্নভাবে মাংস বিতরণে তৎপরতা চালাচ্ছে। এসব চক্র রোহিঙ্গাদের মাঝে গরুর মাংস বিতরণের নামে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে প্রতিবছর মোটা অংকের টাকা লোপাট করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তারা ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাক্যাম্প সংলগ্ন পশুর হাট বসিয়েছে। যাতে গরু ক্রয়-বিক্রয়ে তাদের সুবিধা হয়। এছাড়া তাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে দেশি-বিদেশি কিছু বিতর্কিত সংগঠনের। যারা প্রতি কোরবানির ঈদে বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের টাকা এনে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণের নামে লুটপাট করে।
উখিয়ার ৫নং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা আবু তালেব জানান, গত ২ বছর তারা পূর্বের স্মৃতি অনেকটা ভুলে যেতে বসেছে। তাই এবার ঈদ আনন্দ কিছুটা হলেও উপভোগ করবেন।
মরিয়ম বেগম নামের এক রোহিঙ্গা জানান, গত দুই বছর আগে কোরবানির ঈদের দিন ঠিক এই সময় তাদের নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে বাংলাদেশে। এখানে এবারসহ দু’বার আমরা কোরবানির ঈদ উদ্যাপন করতে যাচ্ছি। গত বারের ন্যায় একটু আনন্দে ঈদ কাটাব এবার।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, সরকারি উদ্যোগের বাইরে কারো গরু অথবা মাংস বিতরণের সুযোগ নেই।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাক্যাম্পে মাংস বিতরণের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। প্রতি পরিবারের মাঝে কত কেজি করে মাংস বিতরণ হবে, তা চ‚ড়ান্ত হয়নি। তবে বিতরণের জন্য যে পরিমাণ মাংস নির্ধারণ হবে তার ৩০ ভাগ স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। ৭০ ভাগ বিতরণ হবে রোহিঙ্গাদের মাঝে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) আবুল কালাম সরকারি উদ্যোগে গরু কেনা হয়নি উল্লেখ্য করে বলেন, আমরা বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিওর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জন্য যেসব গরু পাব, সেগুলো একত্রিত করে যেখানে, যতটা দরকার পাঠানো হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্যাম্প ইনচার্জদের তত্ত¡াবধানে মাংস বণ্টন করা হবে।