দাম কমছে চাল-পেঁয়াজের বাড়ছে ভোজ্যতেলের

78

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে ভোজ্যতেলের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চাল-পেঁয়াজদের দাম কমলেও ভোজ্যতেলের দামে ছিল উর্ধ্বগতি। এ সময়ে মণে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ২৭৫ টাকা।
শীত মৌসুমে অপেক্ষাকৃত কম চাহিদার পাম অয়েলের দাম বৃদ্ধিকে অনেকে কারসাজি বললেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে হঠাৎ করে বুকিং রেট বেড়ে যাওয়ার কারণে খাতুনগঞ্জের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার খাতুনগঞ্জে সিটি গ্রুপের পাম অয়েলের দাম ছিল প্রতিমণ ২ হাজার ১২৫ টাকা। ১৫ দিন আগে দাম ছিল ১ হাজার ৯৫০ টাকা। একইভাবে এস আলম পাম অয়েলের দাম দুই সপ্তাহ আগে ১ হাজার ৯৫০ টাকা থাকলেও বুধবার বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১শ টাকায়। টিকে গ্রুপের পাম অয়েলের দাম ছিল এস আলম গ্রুপের মতোই।
আরেক ভোজ্যতেল সুপার’র দামও প্রতি মণে ১শ টাকা বেড়েছে। বুধবার টিকে গ্রুপের সুপার বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ ২ হাজার ২শ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১শ টাকায়। একইভাবে ১৫ দিন আগে সিটি গ্রুপের সুপার বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার ১৫০ টাকা। কিন্তু বুধবার মণপ্রতি ১শ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ২৫০ টাকা করে। তাছাড়া এস আলম সুপার বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১শ টাকা করে। ১৫ দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১শ টাকা।
সয়াবিল তেলের দামেও শীর্ষে সিটি গ্রæপ। গতকাল বুধবার সিটি গ্রুপের সয়াবিন বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ ২ হাজার ৯২০ টাকা। সপ্তাহ দুয়েক আগেও বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৮২০ টাকা। এস আলম গ্রুপের সয়াবিন বাজারে না থাকলেও টিকে গ্রুপের সয়াবিন বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ ২ হাজার ৮৮০ টাকা। ১৫ দিন আগে দাম ছিল ২ হাজার ৭৮০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের ডিও ব্যবসায়ী আবু তাহের জানান, ‘শীতকালে পাম অয়েল ঘোলাটে হয়ে যায়। ফলে চাহিদা কম থাকে। দামও বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কম থাকে। তবে এবার চিত্র ভিন্ন। শীতের মৌসুম শেষ না হতেই পাম অয়েলের দাম হু হু করে বাড়ছে।’
এদিকে দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে কমেছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় নাসিক জাতের ভাল পেঁয়াজ ১৮-১৯ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩-১৪ টাকায়। তবে স্থলবন্দর এলাকাগুলোর মোকামে ১২ টাকার নীচে বিক্রি হচ্ছে এসব পেঁয়াজ।
কথা হলে মধ্যম চাক্তাইয়ের আড়তদার ও আমদানিকারক আবুল বশর পূর্বদেশকে বলেন, ‘হঠাৎ বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। আমরা পাইকারিতে অপেক্ষাকৃত ভালমানের পেঁয়াজ বিক্রি করছি প্রতিকেজি ১৩ থেকে ১৪ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এসব পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেশি ছিল।’
চাক্তাইয়ের আড়তে চালের দামও পড়তির দিকে। তবে বেচাবিক্রি নেই বলে জানান একাধিক ব্যবসায়ী। আমন মৌসুমে সরকারিভাবে প্রতিকেজি ৩৬ টাকা করে চাল কেনার কারণে বাজারে দাম উর্ধ্বমুখী হয়েছে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী নতুন সরকার গঠনের পর সরকারিভাবে চাল কেনা বন্ধ করলে দাম কিছুটা কমতে থাকে। চলতি সপ্তাহে চাক্তাইয়ের আড়তগুলোতে চালের তেমন একটা বেচাকেনাও হয়নি।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কিছুটা কমেছে। ১৫ দিন আগে স্বর্ণা সিদ্ধ জাতের চাল চিক্রি হয়েছে ৫০ কেজির বস্তা ১৬৫০ টাকায়। গতকাল বুধবার এ চালের দাম ছিল ১৫২০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে জিরাশাইল সিদ্ধ ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হয় ২ হাজার ৩শ টাকায়। বর্তমানে বস্তায় ২০-৩০ টাকা করে কমেছে। একইভাবে প্রায় সব ধরনের চালের দাম নিম্নমুখী।
ভোগ্যপণ্যের দাম উঠানামার বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সদস্য খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আলমগীর পারভেজ পূর্বদেশকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট বেড়ে গেছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি টনে ৩০-৪০ ডলার বেড়েছে। আবার ডলারের দামও বেড়ে গেছে। যে কারণে খাতুনগঞ্জের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে।’