দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে তোড়জোড়

25

নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্য বিলুপ্ত হওয়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে চার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্র। এসব নির্দেশনা মেনে পদপ্রার্থীদের আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে হবে। শুধুমাত্র ‘অবিবাহিত’ ও সাংগঠনিক এলাকার বাসিন্দারাই ছাত্রদলে পদপ্রার্থী হিসাবে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে পারবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি আশরাফুল আলম ফকির লিংকন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের নতুন আহব্বায়ক কমিটি গঠন করার জন্য আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ কার্যালয়ে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে পদপত্যাশীদেরকে তাদের জীবনবৃত্তান্ত ও প্রয়োজনীয় সংযুক্তি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল।’
জীবনবৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় দপ্তর হতে সরবরাহকৃত ফর্মে বা একই ফরমেটে লিখতে হবে জানিয়ে ৪ নির্দেশনায় বলা হয়, অবশ্য সকল প্রার্থীকে অবিবাহিত, এসএসসি ২০০৩ সন হতে পরবর্তী হতে হবে এবং রেজি: ২০০১-২০০২ হতে হবে। পদপ্রত্যাশীদের অবশ্যই সাংগঠনিক দক্ষিণ জেলার বাসিন্দা হতে হবে। জেলার অধীনস্থ সম্প্রতি ঘোষিত ইউনিট সমূহের নেতৃবৃন্দ জেলায় আবেদন করতে পারবেন না। জেলা কমিটির কেউ উপজেলা, পৌর ও সমমানের ইউনিটে প্রার্থী হতে পারবেন না।
সংযুক্তি হিসাবে এসএসসি অথবা সমমানের সার্টিফিকেটের ফটোকপি, প্রার্থীর নিজের ও পিতা-মাতা উভয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জমা দিতে বলা হয়।
এর আগে গত বুধবার ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক মো. আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারীর সই করা এক চিঠিতে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানানো হয়।
তারও আগে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের ৫ জনের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। কমিটি ঘোষণার একমাস পরই দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করার অভিযোগ এনে সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হায়দার চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী মনিরকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। অব্যাহতি পাওয়া দুজনই রাজনীতিতে জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিরোধী হিসেবে পরিচিত। ২ জন অব্যাহতি পাওয়ার পর সভাপতি শহীদুল আলম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মহসীন ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কেএম আব্বাসকে দিয়ে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছিল। তবে তাদের মধ্যেও ছিল না ঐক্য। কমিটি গঠনসহ নানা ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থানে ছিলেন তারা। সিনিয়র নেতাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিভক্ত ছিল ছাত্রদল। সিনিয়র নেতাদের বিরোধপূর্ণ সম্পর্কে পুঁজি করে আর্থিক লেনদেনে জড়ার অভিযোগ আছে সভাপতি শহীদের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রে যাওয়া সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই দক্ষিণ জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। তাছাড়াও ‘ছাত্র’ দাবি করা তিন সন্তানের জনক শহীদুল আলম শহীদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই বিস্তর অভিযোগ উঠে। সাধারণ সম্পাদক মো. মহসীনের বিরুদ্ধেও সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ থাকায় কেন্দ্র থেকে সাময়িক অব্যাহতিও দেয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বিলুপ্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির আগে ২০১১ সালে জসিম উদ্দিনকে আহŸায়ক এবং মরহুম শহীদুল ইসলামকে সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক করে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট আহব্বায়ক কমিটি করা হয়েছিল। তারও আগে ২০০২ সালের নভেম্বরে মহসীন চৌধুরী রানাকে সভাপতি ও রেজাউল করিম নেছারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছিল।