দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন সড়কে চলছে অবৈধ অটোরিকশা

103

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১৭ হাজারের অধিক সিএনজিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করছে। তবে এ সকল অটোরিক্সার মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার অটোরিক্সাতে বিআরটিএ’র রেজিস্ট্রশন বা নম্বর প্লেট নেই বলে জানা যায়। স্থানীয় থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে এসব অটোরিক্সা মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এসব অটোরিক্সা চলাচল করছে বিনা বাধায়। এসব অটোরিক্সা মহাসড়কের দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া অংশে তেমন চলাচল করতে না পারলেও কর্ণফুলী, পটিয়া, চন্দনাইশ অংশে বিনা বাধায় চলাচল করছে। এ বিষয়ে কোন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা হাইওয়ে পুলিশ। যাত্রী সাধারণের অভিযোগ, এসব অটোরিক্সা চলাচলের কারণে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১ আগস্ট সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দেশের ২২টি জাতীয় মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারিচালিত রিক্সা, টেম্পু, থ্রি-হুইলারসহ সব ধরণের তিন চাকাবিশিষ্ট যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এরপর কিছুদিন সড়কে তিনচাকা বিশিষ্ট যানবাহন চলাচল না করায় দুর্ঘটনার পরিমাণ কমে আসে। কিন্তু কে শোনে কার কথা।
ইচ্ছে মতো টোকেনের মাধ্যমে এখন মহাসড়কে তিনচাকা বিশিষ্ট যানবাহন চলাচল করছে বিনা বাধায়। আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা বলেছেন, এসব সিএনজি চালিত অটোরিক্সার কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনা হচ্ছে। সাতকানিয়া এলাকায় প্রায় চার হাজার সিএনজিচালিত অটোরিক্সা প্রতিনিয়ত চলাচল করে। একইভাবে চন্দনাইশ উপজেলায় ২ সহস্রাধিক অটোরিক্সা চলাচল করলেও সাতকানিয়া ৫ শতাধিক, চন্দনাইশে প্রায় ২শ গাড়িতে বিআরটিএ’র রেজিস্ট্রেশন বা নম্বর প্লেট রয়েছে। অন্যগুলোতে চট্টগ্রাম থ-১২ বা ১৩ লেখার পর এএফআর বা খালি থাকতে দেখা যায়। নম্বরবিহীন অটোরিক্সা সড়কে চলাচল করার পাশাপাশি অধিকাংশ চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই বলে জানা যায়। বাঁশখালী, আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর মইজ্জারটেক সড়ক ব্যবহার করে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু (নতুন ব্রিজ) থেকে পেকুয়া মগনামা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার অটোরিক্সা চলাচল করে। প্রতিটি অটোরিক্সার চালক টোকেন সংগ্রহ করে এ সড়কে চলাচল করছে বলে জানা যায়। এসব এলাকার প্রায় অর্ধশত স্টেশনে একটি সংঘবদ্ধ চক্র টোকেন বিক্রির সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন চালকরা। সংঘবদ্ধ চক্রটির কাছ থেকে টোকেন সংগ্রহ না করলে পুলিশি হয়রানীর স্বীকার হতে হয় চালকদের। এসকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাইওয়ে পুলিশ। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলার আভ্যন্তরীণ সড়কে অবাধে চলছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি চালিত ট্যাক্সি। ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব এবং মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল। কিছু কিছু অটোরিক্সাতে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক বা প্রেস লেখা থাকতে দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পটিয়ার কয়েকজন সিএনজি অটোরিক্সা চালক জানান, মহাসড়কে চলাচলের জন্য প্রতিটি সিএনজি ট্যাক্সি থেকে প্রতি মাসে ২শ টাকা করে সমিতিকে দিতে হয়। টাকা না দিলে গাড়ি চালাতে দেয়া হয় না। তাই বাধ্য হয়েই টোকেন নিয়ে চালাতে হচ্ছে তাদের। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর সহকারী পরিচালক (চট্টগ্রাম জেলা) মো. শাহ আলম বলেছেন, নম্বরবিহীন সিএনজি ট্যাক্সি চালানোর বিষয়টি দুঃখজনক। নম্বরবিহীন যানবাহন চলাচল করলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারেন।