তেল, চিনি ও পেঁয়াজের দাম আরও কমেছে

62

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে নিম্নমুখি ভোগ্যপণ্যের দাম। ফলে নগরীর বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে তেল-চিনি ও পেঁয়াজের। গতকাল রবিবার খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ভারতীয় পণ্যের ট্রানজিট বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। করোনার প্রভাব না কাটলে পবিত্র রমজান মাসে কৃত্রিম সংকটও তৈরি হতে পারে। তখন পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রমজানের জন্য পণ্য মজুদ করছেন না কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যতটুকু সম্ভব পণ্য নিয়ে রেখেছি। কিন্তু ট্রানজিট বন্ধ থাকলে এসব পণ্য দিয়ে বেশিদিন চালাতে পারব না। পুনরায় পণ্য আনতে হবে। তাই করোনা কতটুকু প্রভাব ফেলছে তার উপর নির্ভর করে আমাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে।
পাইকারি পর্যায়ে খাতুনগঞ্জে চিনির দাম মণপ্রতি ৯০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এস আলম চিনি মণপ্রতি ৯০ টাকা কমে ২ হাজার ১৫০ (কেজি ৫৭.৬০ টাকা) টাকা, মেঘনা চিনি মণপ্রতি ৮০ টাকা কমে ২ হাজার ১৮০ (কেজি ৫৮.৪১ টাকা) এবং সিটি চিনি মণপ্রতি ১০০ টাকা কমে ২ হাজার ১৮০ (কেজি ৫৮.৪১ টাকা) টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে পাম ওয়েলের দাম পাইকারিতে গত সপ্তাহের তুলনায় মণপ্রতি ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গতকাল পাম অয়েল মণে ২০০ টাকা কমে ২ হাজার ২৩০ টাকা (কেজি ৫৯.৭৫ টাকা) এবং সয়াবিন তেল ১৫০ টাকা কমে ৩ হাজার ২০০ টাকায় (কেজি ৮৫.৭৪ টাকা) বিক্রি হয়েছে।
তেল-চিনির বিষয়ে খাতুনগঞ্জের পিএন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এমদাদুল হক রায়হান বলেন, তেল-চিনির বাজার এখন নিম্নমুখি। পুরো পাইকারি বাজারে মন্দা যাচ্ছে। এখন বেচাকেনা নেই বললেই চলে।
পেঁয়াজ-রসুনের বাজার ঘুরে জানা যায়, পাইকারিতে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মানভেদে কেজিপ ৪৫ টাকা এবং দেশি মেহেরপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি।
পেঁয়াজ প্রসঙ্গে হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ আসাতে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম কমেছে। দেশীয় পেঁয়াজও এখন বাজারে এসেছে তাই দাম নিম্নমুখি।
অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের বাজার ঘুরে জানা যায়, চীনের রসুন কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। নতুন দেশি রসুন কেজি ৮০ টাকা। চীনের আদা কেজি ৮৫ টাকা এবং মিয়ানমারের আদা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দারচিনি অপরিবর্তিত থেকে কেজি ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারে ডালের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। মোটা মশুর ডাল কেজি ৫৪ টাকা, চিকন মশুর ডাল ১০৮ টাকা, মটর ডাল ৩৪ টাকা, মুগডাল ১১৬ টাকা, ছোলা ৫৮ টাকা, ছোলার ডাল ৬২ টাকা ও বাদাম ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে ভারতীয় হলুদ বিক্রি হয়েছে কেজি ৯৮ টাকা (অপরিবর্তিত) এবং দেশি হলুদ ১০০ টাকা। তাছাড়া জিরা ২৭৫ টাকা (অপরিবর্তিত), লবঙ্গ কেজি ৭৫০ টাকা (অপরিবর্তিত), যত্রিক কেজি ৩ হাজার ২০০ টাকা (অপরিবর্তিত) এবং এলাচির মানভেদে কেজি ৩ থেকে ৩ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
শুকনো মরিচের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে- দেশি শুকনো মরিচ কেজি ১৯০ টাকা (পঞ্চগড়ের), ভারতীয় মোটা শুকনো মরিচ ২০০ টাকা (অপরিবর্তিত), চিকন ২৪০ টাকায় (অপরিবর্তিত) বিক্রি হয়েছে।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন পূর্বদেশকে বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাব বাজারে না পড়লে রমজানে পণ্যের দাম বাড়বে না। আর বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের বাজার নিম্নমুখি, এভাবে চলতে থাকলে পবিত্র রমজানে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।