তুরস্ক-কুর্দি লড়াইকে শিশুদের মারামারি বললেন ট্রাম্প

17

সিরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে তুর্কি বাহিনীর সঙ্গে কুর্দিদের প্রাণঘাতী লড়াই-সংঘাতকে দুই শিশুর মারামারির সঙ্গে তুলনা করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার টেক্সাসে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, তুরস্ক আর কুর্দিরা যেন শিশু। তাই তাদেরকে একটু মারামারি করতে দিয়েছেন তিনি। বক্তব্যে সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “আমি যা করেছি তা একটু ব্যতিক্রমী। আমি বলেছি তারা কিছুক্ষণের জন্য লড়ে যাক। বিষয়টা অনেকটা একটি দলে থাকা দুইটি শিশুর মতো। তাদের কিছুক্ষণ মারামারি করতে দিলেন তারপর আবার তাদের ছাড়িয়ে নিলেন।”
যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরই সেখানে থাকা কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ শুরু করেছে তুরস্ক।
বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে ট্রাম্প তুরস্ককে সিরিয়ায় অভিযান থামানোর জন্য চিঠি দিলেও তাতে কাজ হয়নি। সে চিঠি ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। বৃহস্পতিবার টেক্সাসের বক্তৃতায় এ সংকট সামাল দেওয়া নিয়ে নিজের পক্ষ সমর্থনেই ওই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এদিনই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানকে অভিযান বন্ধে রাজি করাতে আঙ্কারা যান। এরপর তুরস্ক সিরিয়ায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি করতে রাজি হয়েছে। যদিও শুক্রবারও সেখানে লড়াই চলছে বলেই প্রতীয়মাণ হয়েছে। ‘দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ সংগঠনের হিসাবমতে, তুরস্কের এই অভিযানে এ পর্যন্ত বেসামরিক নাগরিকসহ কুর্দি যোদ্ধা মিলিয়ে ৫শ’রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কুর্দির সংখ্যাই বেশি। উদ্বাস্তু হয়েছে ৩ লাখ মানুষ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, দুপক্ষ কিছুদিন খুবই নিষ্ঠুরভাবে লড়েছে। তবে সেখানে মার্কিনিদের এক ফোঁটা রক্তও ঝরেনি। তুরস্ক বলেছে, তাদের সিরিয়া অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে সিরিয়ার ভেতর একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করে সেখানে তুরস্কে থাকা ৩৬ লাখের মতো সিরীয় শরণার্থীকে পুনর্বাসন করা। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে তুরস্ক আপাতত ৫ দিন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
এ সময়ে সীমান্তে ওই ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠায় কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সরিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করতে হবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান শুক্রবার বলেছেন, সিরীয় কুর্দি যোদ্ধারা সীমান্ত থেকে সরে যেতে শুরু করেছে। তবে তারা সত্যিই সরে গেল কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তুরস্কের বাহিনী সিরিয়ার উত্তরপূর্ব সীমান্তে অবস্থান করবে।