তিন দিন ধরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ, চরম দুর্ভোগে রোগীরা

74

 

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে স্বজনদের হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে। ফলে তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভুলে আনোয়ার হোসেন নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় স্বজনরা। এ সময় কর্তব্যরত কয়েকজন চিকিৎসকের ওপরও হামলা চালানো হয়।
হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনার বিচারের দাবিতে শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। বিএমএসহ সব চিকিৎসক, কর্মচারী-কর্মকর্তারাও এতে যোগ দিয়েছেন। এ সময় তারা ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি হাসিবুন নাসিম সোহান বলেন, ‘একজন রোগী মারা গেছেন। আমরা তাকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তারপরও রোগীর স্বজনরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। যতদিন হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হবে, ততদিন কর্মবিরতি চলবে।
সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, যদি চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দেওয়া না হয় তাহলে সারা বাংলাদেশে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে। প্রশাসনের উদ্দেশে বলতে চাই, আগে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, অন্যথায় চিকিৎসা
সেবা দিতে পারবো না আমরা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার বলেন, শুধু ইন্টার্ন চিকিৎসক নয়, সব চিকিৎসকরা মানবিকভাবে সাধারণ মানুষদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, কোনও ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া অমানবিক। আমি আশ্বস্ত করতে চাই, আন্দোলন সংগ্রাম না করে চিকিৎসকরা হাসপাতালে ফিরে যাক। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাবো।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার এবং রোগীদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাটি উভয়পক্ষ মীমাংসা করেছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু আর কোনও ঘটনা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। এছাড়াও হাসপাতালের পক্ষ থেকে লিখিত কোনও অভিযোগ না দেওয়ায় আমাদের পক্ষ থেকে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছি না।
এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী জানান, তিন দিন ধরে কোনও ডাক্তার চিকিৎসাসেবা দিতে আসেনি। তিনি অপারেশনের রোগী। তারা বলছে, বাড়ি চলে যেতে। কিন্তু এ অবস্থায় কি বাড়ি যাওয়া সম্ভব? একজন রোগীর জন্য সবাইকে কষ্ট দিচ্ছে তারা। চিকিৎসকরা অমানবিক আচরণ করছে।
সবকিছু গুটিয়ে চলে যাচ্ছেন টেকনাফের ফরিদা বেগম। তিনি বলেন, কে কী করলো তা নিয়ে কোনও ঘোষণা ছাড়া চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করতে পারে না। তাও আবার সদর হাসপাতালের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি মুমূর্ষু রোগীরা কষ্ট পাচ্ছে।