তরুণদের শক্তিমত্তা প্রদশর্নের দিকনির্দেশনা ‘অগ্রযাত্রায় শিক্ষা’

57

রবীন্দ্রনাথ মুখস্থনির্ভর শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতিকে বহুবার আক্রমণ করেছেন। তিনি সৃজনশীলতা বিকাশ শিক্ষার দীপ্তি প্রজ্বলন করতে বারবার তাগাদা দিয়েছেন। গন্ডমূর্খ হওয়ার বিপর্যয়মূখী অপশক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত হওয়াকে নিরুৎসাহিত করেছেন। যথোপযুক্ত বিজ্ঞান শিক্ষার ক্রিয়াশীল ধারায় জীবনীশক্তিকে বিকাশ ঘটানোর আহবান জানিয়েছেন।
উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার আড়ালে সত্যনিষ্ঠ আকর্ষণ কর্মপাপ্তির আনুষ্ঠানিকতা। এক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের অভিভাবকগণও শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে কার্পণ্য করছেন না। লোকশিক্ষা ও গুরুগৃহকেন্দ্রিক শিক্ষার লক্ষ্য ছিল ব্যক্তিগত অর্জন। গুরুদান ও আর্শীবাদ মূলমন্ত্রের শিক্ষা পরিবর্তন ঘটেছে সামাজিক চাহিদার প্রেক্ষাপটে। শিক্ষা অর্জনের তাৎপর্য কেবলই জ্ঞান অর্জন নয়। শিক্ষার সুলক্ষ্য এখন সামাজিক অবস্থানের প্রতিফলন। বাণিজ্যিক প্রসার ঘটানোর কলাকৌশলই বিবেচ্য বিষয়।
এলক্ষ্যে শিক্ষা অর্জন ক্ষেত্রের দৃষ্টিভঙ্গি বিপর্যয়মুখী তারুণ্যকে বেকারত্বের তান্ডবলীলা থেকে উদ্ধার করতে পারে। উদ্ধার প্রক্রিয়ার সুর্নিদিষ্ট নিশ্চিত বিষয়সমূহের পরামর্শ নিয়ে আলোচিত এই প্রকাশনা ‘অগ্রযাত্রায় শিক্ষা’। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমাজ আকাক্সক্ষার আকর্ষণবোধ জাগাতে লেখালেখির মাধ্যমে অবদান রাখছেন মো. আবুল হাসান ও খন রঞ্জন রায়। কর্মবাজারের চাহিদা মোতাবেক সুর্নিদিষ্ট বিষয়ভিত্তিক প্রযুক্তি শিক্ষা চালু করার সুষ্পষ্ট প্রস্তাবনা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সমাজকে শিক্ষা সচেতন করছেন লেখকদ্বয়। দক্ষ, আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে সৃজনশীল মানবসম্পদের অর্ন্তদৃষ্টিসম্পন্ন শক্তিশালী কল্যাণমুখী জাতি গঠনের উদ্দেশ্যই অগ্রযাত্রায় শিক্ষা।
জীবনকে উপভোগ করার রহস্যঘেরা স্বপ্নচারী শিক্ষা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে দেওয়াই লেখকদ্বয়ের স্বপ্ন। আত্মবিশ্বাসী স্বপ্নবাদী চেতনাকে পরিশ্রমের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের জন্য উৎসাহী ও আগ্রহী করা এই প্রকাশনার লক্ষ্য। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার বহুদাবিভক্তি ও আদর্শগত ভিন্ন মত থাকলেও সকলের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের কারণে লেখকদ্বয় অনেক ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সাফল্য লাভ করেছেন।
আমাদের তরুণদের কর্মক্ষম করতে পারলেই আগামীর বাংলাদেশ তাদের হবে। স্বর্নিভর অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তরুণ প্রজন্মকে কর্মমুখী, জীবনমুখী করতে সুর্নিদিষ্ট প্রস্তাবনা এই প্রকাশনা। এখানে শিক্ষার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। কর্মবাজারের চাহিদা নির্ভর শিক্ষা কোর্স কারিকুলাম চালু করে মানবিক, সমাজবান্ধব, জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলন প্রক্রিয়া অগ্রসর হওয়ার দিক নির্দেশনা আছে।
এই ক্ষেত্রে ‘অগ্রযাত্রায় শিক্ষা’ বইয়ের প্রবন্ধগুলো পর্যালোচনা করে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুর্নিদিষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির সর্বতোসিদ্ধ নিয়ামকশক্তির শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের চাহিদা মোতাবেক কর্মজীবী শিক্ষার বহুমুখী রূপ উন্মোচিত হবে। আলাদা-আলাদা প্রবন্ধের মাধ্যমে ভিন্নধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবীর যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। আত্মজাগরণের স্বকীয় চর্চার এই বই যারা পাঠ করবেন তারা ভিন্ন ধারার শিক্ষা চিন্তায় অনুপ্রাণিত হবেন। আকাশছোঁয়া তাদের কল্পনা নয়, নয় কোন নৈরাশ্য। বাস্তবতার মুখোমুখি নতুন ধারার বৈচিত্রময় সৌন্দর্যের প্রতীক এই প্রকাশনা।
সময়োপযোগী ইতিবাচক উন্নতির অন্তরাল ধারার এই লেখাসমূহ বই আকারে বইমেলা-২০১৯ উপলক্ষ্যে প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ। ঝকঝকে ছাপা, পুষ্ট কাগজে ২৮০ পৃষ্ঠার এই বইয়ের দাম রাখা হয়েছে ৪০০ টাকা ।
আমরা এর পাঠকপ্রিয়তা কামনা করি।