ড্রেন পরিষ্কারে ক্রাশ কর্মসূচি শুরু কাল

54

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে নগরীর প্রাইমারি ড্রেন থেকে মাটি-আবর্জনা পরিষ্কারের বিশেষ ক্রাশ কর্মসূচি। আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। মূলত বর্ষার আগে জলবদ্ধতার তীব্রতা কমাতে এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এ কাজের জন্য পরিচ্ছন্ন বিভাগের ২৫০ শ্রমিককে রাখা হয়েছে।
সকালে দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন সিটি মেয়র। জানতে চাইলে তিনি পূর্বদেশকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে অনেক বড় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে। সবগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে। প্রতি বর্ষার আগেই সিটি কর্পোরেশন নালা পরিষ্কার করে থাকে। তবে এবার বিশেষ গুরুত্বসহকারে ক্রাশ অভিযান চালানো হবে। তাই এ বিশেষ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, নগরজুড়ে কোন পরিকল্পিত ড্রেন ছিল না। এমনকি অনেকগুলো সড়ক তৈরি করা হয় ড্রেন ছাড়া। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিকল্পিত ড্রেন করার চেষ্টা করছি। নতুন নতুন ড্রেন করছি। এবার বর্ষার আগে নগরীর সকল নালা যাতে পরিষ্কার থাকে, তাই বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।
ড্রেন পরিষ্কার জলবদ্ধতা নিরসনে কতুটুক ভূমিকা রাখবে? এমন প্রশ্নে সিটি মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের একটি অংশ ড্রেন পরিষ্কার করা। সেটি সিটি কর্পোরেশন দক্ষতার সাথে করতে সক্ষম এবং করে আসছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেগুলো গভীর স্টাডির অভাব রয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন নিতে যত তোড়জোড় ছিল, বাস্তবায়নে তেমন তোড়জোড় নেই। ফলে খালগুলো এখনও অপরিষ্কার থেকে গেছে। চট্টগ্রাম শহরের খালগুলো বঙ্গোপসাগরের সাথে সরাসরি আবার কর্ণফুলী বা হালদার সাথে সংযুক্ত। তাই খালগুলো পরিষ্কার করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। প্রকল্পের কাজের সঠিক অগ্রগতি ও সমন্বয় হয়ত নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে স্থায়ী মুক্তি দিবে।
তিনি বলেন, পরিচ্ছন্নতার কাজে সিটি কর্পোরেশনের জনবল ও দক্ষতা দুটোই রয়েছে। আমি সিডিএকে আহবান জানিয়েছি, প্রকল্পের বিশেষ কিছু কাজ সিটি কর্পোরেশনকে দিয়ে দিতে। তাহলে বাস্তবায়ন দ্রুত হবে এবং নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবে। তাছাড়া সিডিএ তো নিজে কাজ করছে না, ঠিকাদার দিয়ে করাচ্ছে।
চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত ২০নং দেওয়ান বাজার, ২১নং জামালখান, ৩২নং আন্দরকিল্লা, ৪০নং উত্তর পতেঙ্গা, ৪১নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে বিশেষ ক্রাশ অভিযান চলবে। এছাড়া ১৫ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত ৭নং পশ্চিম ষোলশহর, ৮নং শুলকবহর, ১৫নং বাগমনিরাম, ২৪নং উত্তর আগ্রাবাদ, ৩৯নং দক্ষিণ হালিশহর, ১৯ মার্চ থেকে ২২ মার্চ ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া, ১৯নং দক্ষিণ বাকলিয়া, ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা, ৩৭নং উত্তর মধ্য হালিশহর, ৩৮নং দক্ষিণ মধ্য হালিশহর, ২৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ ৪নং চান্দগাঁও, ১৪নং লালখান বাজার, ১৬নং চকবাজার, ৩১নং আলকরণ, ২৬নং উত্তর হালিশহর, ২৭ থেকে ৩০ মার্চ ১০নং উত্তর কাট্টলী, ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী, ১৩নং পাহাড়তলী, ২২নং এনায়েত বাজার, ৩৫নং বকশীর হাট, ৩১ মার্চ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ৯নং উত্তর পাহাড়তলী ২৩নং উত্তর পাঠানটুলী, ২৫নং রামপুর, ৩৪নং পাথরঘাটা, ২৭নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ৪ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল ৩নং পাঁচলাইশ, ৫নং মোহরা, ৬নং পূর্ব ষোলশহর, ১২নং সরাইপাড়া, ৩৩নং ফিরিঙ্গি বাজার, ৮ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল ১নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাহাড়তলী, ২নং জালালাবাদ, ১৮নং প‚র্ব বাকলিয়া, ২৮নং পাঠানটুলী, ২৯নং পশ্চিম মাদারবাড়ী, ৩০নং পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে এ অভিযান চলবে।
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী বলেন, ২৫০ জন কর্মীকে প্রাইমারি ড্রেন অর্থাৎ তিন ফুটের কম প্রশস্ত ড্রেনসমূহ পরিষ্কার করার জন্য রাখা হয়েছে। প্রতি ওয়ার্ডে ৫০জন কর্মী টানা ড্রেন পরিষ্কারের কাজ করবে। এভাবে প্রতি চার দিনে পাঁচটি ওয়ার্ডের ড্রেন পরিষ্কারে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোন ওয়ার্ডে যদি চারদিনের বেশি কাজ করতে হয়, কর্মীরা তাও করবে।