ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে অসাধুচক্র গুজব ছড়াচ্ছে

32

বিভাগীয় কমিশনার বলেছেন, ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কিন্তু ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এক শ্রেণির অসাধুচক্র গুজব ছড়াচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেছে ১ জন, প্রচার করা হচ্ছে ১০ জন। চট্টগ্রাম বিভাগের চেয়ে অন্যান্য জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি। সরকার দেশের সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ফ্রি চিকিৎসা, ডেঙ্গু শনাক্তকরণে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতেও ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। চিকিৎসার নামে কেউ অত্যাচার করতে পারবে না। একজন ডেঙ্গু রোগীর জন্য তাৎক্ষণিক কি করণীয় তার ব্যবস্থা সকল হাসপাতালে আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক রয়েছে। ডেঙ্গুর বিষয়টি দুর্যোগ হিসেবে দেখা দেয়ার কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঈদেও তাদের ছুটি থাকবে না। যেসব হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসাসামগ্রীর সংকট রয়েছে সেখানে কয়েকদিনের মধ্যে সরবরাহের ব্যবস্থা করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ৮/১০ দিনের মধ্যেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আসবে। ১৯৭১ সাল ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে অনেক দুর্যোগ সাহসের সাথে মোকাবেলা করা হয়েছে। ঘরে যদি এডিস মশা থাকে তাহলে বাইরে নিরাপদ রেখে কোন লাভ নেই। সকলে মিলে জনসচেতনতার মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবেলা করে জয়ী হবো। গতকাল বুধবার নগরীর পিটিআই প্রাঙ্গনে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী মশক নিধন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান ও জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিভাগীয় প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা, চট্টগ্রাম বিভাগ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, এডিস মশা থেকে রক্ষায় ঘর ও আশপাশের যেকোন পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে। এয়ার কন্ডিশনার, ফ্রিজ, ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, ড্রাম, পরিত্যক্ত টায়ার, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারিকেলের মালা, কন্টেইনার, মটকা, ব্যাটারি শেল, পরিস্কার পানিতে এডিস মশা ডিম পারে। এগুলো সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে। নর্দমায়, নোংরা ও ময়লা পানিতে এডিশ মশা ডিম পারে না। যেকোন উপায়ে এডিস মশা ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে বাড়ি-ঘরের আশপাশ সবসময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পিটিআই-তে এ আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষকদের অনেক দায়দায়িত্ব আছে। এখানে যারা প্রশিক্ষণরত তারা সকলেই স্কুলের শিক্ষক। শিক্ষকরা তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ে ছাত্র ও অভিভাবকদেরকে ডেঙ্গু রোধ ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন করতে পারবে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষকদের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিধনের বার্তাটি সাধারণ জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত সকল কর্মচারী একজোট হয়ে ডেঙ্গু মোকাবেলা করবো।
প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সুলতান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মশকনিধন অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. হাবিবুর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব আবু শাহেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু হাসান সিদ্দিক, প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিচালক রাশেদা বেগম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসরিন সুলতানা, পিটিআই সুপার কামরুন নাহার, প্রাথমিক শিক্ষা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার পাল, মামুন কবির, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হৃষিকেশ শীল, জহির উদ্দিন চৌধুরী, পিটিআই’র সহকারী সুপার রওশন আক্তার জাহান, চসিক’র পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা হাসান রশিদ, বিভাগীয়-জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ, সাংবাদিক, থানা প্রাথমিক অফিসার, সহকারী থানা প্রাথমিক অফিসার, পিটিআই’র প্রশিক্ষণার্থীবৃন্দ ও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। শেষে পিটিআই আঙ্গিনায় ফগার মেশিন ও হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে মশকনিধন ওষুধ ছিটান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। খবর বিজ্ঞপ্তির