ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব

3

ইকবাল ফারুক, চকরিয়া

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সংলগ্ন ছড়া ও জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে পার্কের সীমানা দেয়াল, চাষের জমি ও জনবসতি।
সরেজমিন দেখা যায়, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ৯শ হেক্টর এলাকার পূর্বপ্রান্তে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি মালুম্যা ছড়ার অবস্থান। এ ছড়ার কোন ইজারা না থাকার পরও প্রতিদিন শতাধিক ডাম্পার নিয়ে বালু উত্তোলন করে পাচার করছে বালুদস্যুরা। সাফারি পার্কের অতি সন্নিকটে দীর্ঘদিন ধরে এ ধ্বংসাত্মক কর্মকাÐ চললেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
অপরদিকে, জনবসতি দিয়ে উত্তোলনকৃত বালু ভর্তি ডাম্পার আসা-যাওয়ার ফলে চাষের জমি ও বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হলেও প্রভাবশালী বালুখেকো চক্রের ভয়ে প্রতিবাদ করতে কেউ সাহস পাচ্ছেন না। এছাড়া সাফারি পার্কের একটি টহল টিম পার্কের পূর্ব সীমান্তে নিরাপত্তা জনিত কাজে নিয়োজিত থাকলেও তারাও রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
পার্কসংলগ্ন মাইজপাড়ার সেলিনা আক্তার বলেন, পার্কের পূর্ব পাশে জমিতে তারা দীর্ঘ সময় ধরে চাষাবাদ করছেন। স্বামী আবদুস শুক্কুর মিস্ত্রী মারা যাওয়ার পর তাদের জমি ও পার্কের সন্নিকট থেকে বালু উত্তোলন করছে বালুদস্যুরা। ফলে জমির ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের উত্তর মালুম্যা এলাকার মৃত আবদুস ছমদের ছেলে ছাবের আহমেদ ও একই এলাকার মৃত বদি আলমের ছেলে সিরাজ সর্দার এই অবৈধ বালু উত্তোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষ কোনরূপ ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নিবেন বলেও জানান তিনি।
বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করে ছাবের আহমদ বলেন, সাফারি পার্ক নয়, আমাদের খতিয়ানি জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করছি। এখানে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের বাঁধা দেয়ার অধিকার নাই। এছাড়া পানি চলাচলের ছড়াখালও তার খতিয়ানভুক্ত জমি বলে দাবি করেন তিনি।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম বলেন, পার্ক সংলগ্ন এলাকায় বালু উত্তোলনের বিষয়ে জানা ছিল না। তাই কোনরূপ পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।