‘ডিসইনফেকশন বুথ’ উখিয়ায়

35

কয়েকজন রোহিঙ্গার দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর কক্সবাজারের উখিয়ায় ক্যাম্পে যাতায়তকারী যানবাহনকে জীবাণুমুক্ত করতে ‘ডিজইনফেকশন বুথ’ স্থাপন করেছে সেনাবাহিনী।
একই সঙ্গে মাইকিংসহ নানা সচেতনতামূলক প্রচার এবং পুলিশসহ অন্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে যৌথ টহল জোরদার করেছে সেনাবাহিনী।
শনিবার শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কে (কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক) উখিয়া ডিগ্রী কলেজ গেইট এলাকায় এই বুথ স্থাপন করা হয় বলে সেনাবাহিনীর রামুর ১০ পদাতিক ডিভিশনের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী মেজর তানজিলুর রহমান জানান।
বৃহস্পতি থেকে শনিবার এই তিন দিনে ওই এলাকায় চারজন রোহিঙ্গার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
মেজর তানজিলুর রহমান জানান, উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গার মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় ক্যাম্পের অন্য বান্দিারা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।
‘এই ঝুঁকি এড়াতে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়া ডিগ্রী কলেজ গেইট সংলগ্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর তল্লাশী চৌকিতে জীবানুনাশক ‘ডিজইনফেকশন বুথ’ বসানো হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়তকারী যানবাহনগুলোকে স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস রয়েছে। খাদ্য ও ত্রাণ এবং জরুরি প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের নানা সহায়তার কাজে প্রতিদিনই যাতায়ত করে ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন।
‘ফলে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা এসব যানবাহনকে জীবাণুমুক্ত রাখতে সেনাবাহিনী ‘ডিজইনফেকশন বুথ’ স্থাপন করে এ ব্যবস্থা নিয়েছে।’
তবে এ ক্ষেত্রে শুধু শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত যানবাহনগুলোকে বারকোড স্ক্যান করে জীবাণুমুক্ত করার পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা।
মেজর তানজিলুর বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ক্যাম্পে সেনা সদস্যরা মাইকিংসহ নানা সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যাম্পের বিভিন্ন প্রবেশ পথে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে বিনা প্রয়োজনে কাউকে ভেতরে প্রবেশ এবং বাহির হতে নিষেধের পাশাপাশি নজরদারী অব্যাহত রেখেছে।
‘এছাড়া সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মতো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলে উদ্বুদ্ধকরণ এবং পুলিশসহ অন্যান্য আইশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে যৌথ টহল চালাচ্ছে সেনা সদস্যরা।’
তাছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি (কমিউনিটি নেতা) এবং স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কমিউনিটি সভা আয়োজন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মেজর তানজিলুর আরও জানান, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়া রোহিঙ্গারাসহ তাদের সংস্পর্শে আসা রোহিঙ্গাদের এক হাজার ২৭৫টি বাড়ি ও মসজিদসহ নানা স্থাপনা প্রশাসন অবরুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এতে সেনা সদস্যরা আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যৌথভাবে অবরুদ্ধ এলাকায় নজরদারীসহ বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন।
এসব বাড়ি ও স্থাপনাগুলোতে লাল চিহ্ন অংকিত করে লাল পতাকা ঝোলানো হয়েছে বলে জানান মেজর তানজিলুর। খবর বিডিনিউজের